জিজ্ঞাসা-১২৩১২
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
মুহতারাম, জামায়াতের নির্ধারিত সময়ের পর কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য দেরি করা কি জায়েজ হবে আর মসজিদে জায়নামাজ বিছিয়ে জায়গা দখল করে রাখা জায়েয হবে কি? তারিখ: ১৯/১০/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আহসান হাবিব ঢাকা -----
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর কথা হলো, মসজিদের জামাত যথাসময়ে আদায় করাই বাঞ্ছনীয়। অবশ্য ইমাম মুকতাদা হাল বুঝে (পরিস্থিতি বুঝে ) মুসল্লিদের সুবিধার্থে দুচার মিনিট দেরি করা অসুবিধা নেই।
তবে মুসল্লিদের কষ্ট দিয়ে, কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য দেরি করা ঠিক হবে না। কিন্তু উক্ত ব্যক্তির জন্য দেরি না করলে, যদি জুলুমের শিকার হওয়ার ভয় হয়, এ ক্ষেত্রে ইমামের জন্য দেরি করা জায়েয হবে।
আর জামায়াতের নামাজ আদায় করার অনেক হিকমাহ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো গরিব-ধনী, আমির-ফকির, সাদা-কালোর মধ্যে ভেদাভেদ দূর করা। ইমাম ব্যতিত অন্য কারও জন্য জায়গা নির্ধারিত নেই। অবশ্য যারা জ্ঞানী (ইমামের স্থলাভিষিক্ত হতে পারে) তারা ইমামের কাছাকাছি থাকবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলবুরহানে জিজ্ঞাসা-১৪০ শিরোনামে আলোচিত হয়েছে। উক্ত লিংকটি দেওয়া হলো,
https://al-burhaan.blogspot.com/2022/06/blog-post_27.html
যাই হোক, কোনো ব্যক্তি বর্গের জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে জায়গা দখল করে রাখা জায়েয নেই, মাকরুহ। সূত্র: রদ্দুল মুখতার- ১ম খণ্ড,৬৬২ পৃষ্ঠা, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-১০ খণ্ড,৫৩ পৃষ্ঠা; ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩২১
সারকথা হলো, কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য দেরিতে জামাত শুরু করলে, হক্কুল ইবাদ নষ্ট হয়। এমতাবস্থায় ইমামের করণীয় হলো,
قَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ، يَقُولُ : مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيَفْعَلْ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ
অর্থ: হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তোমদের কেউ যখন কোন মন্দ কাজ হতে দেখে, তখন সে যেন তা (শক্তি থাকলে) হাত দ্বারা প্রতিরোধ করে, যদি হাত দ্বারা প্রতিরোধ করার শক্তি না থাকে, তবে যেন মুখ (কথা) দ্বারা প্রতিবাদ করে। যদি মুখ দ্বারা সম্ভব না হয়; তাহলে সে যেন অন্তর দ্বারা ঘৃণা করে, পরিবর্তনের চিন্তা-ফিকির করে। আর এটা হচ্ছে ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর। মুসলিম-৪৯, ঈমান অধ্যায়; আবু দাউদ-১১৪০; তিরমিজি-২১৭২; নাসায়ি-৫০০৮; মুসনাদে আহমদ-১১০৭৩
এ হাদিস জানা গেল, কোন অন্যায়কে প্রতিরোধ করার তিনটি স্তর রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আলেম/ইমাম সমাজের প্রশাসকের ভূমিকা নেই। তাই পরের দুটি পদ্ধতিতে কাজ করবে।
সুতরাং বলা যায়, উক্ত ব্যক্তি/কর্তৃপক্ষকে হিকমাহর সাথে বুঝানো। তারপরও যদি তারা না মানে, এর দায়ভার তাদের উপর, আলেম/ইমামের উপর নয়।
والله اعلم بالصواب