সুফিয়ায়ে কিরামের তরীকা
হযরত থানবী (রহঃ) ইরশাদ করেন যে, সুফিয়ায়ে কিরামের তরীকার আসল ও প্রকৃত বস্তু হলো 'সোহবতে শাইখ' এবং 'মহব্বতে শাইখ' এ দুটি বস্তু বাদ দিয়ে শুধু তা'লীম আর তালকীন কোন কাজে আসে না । পক্ষান্তরে তা'লীম ও তালকীন ছাড়া শুধু সোহবত বা সংস্পর্শও যথেষ্ট কার্যকর ও উপকারী হয়ে থাকে। পূর্ব যুগের বুযুর্গানে দ্বীনের খুব বেশী তালীম ও তালকীন দেয়ার ব্যাপক অভ্যাস ছিলো না। বরং তাদের সোহবত ও সংস্পর্শের বরকতেই নফসের ইসলাহ হয়ে যেতো।
খুব সম্ভব হযরত মাওলানা ইসমাঈল শহীদ (রহঃ) 'মানসাবে ইমামত' নামক গ্রন্থে লিখেছেন, বুযুর্গানে দ্বীনের ফয়েয সূর্যের সোহবত বা সংস্পর্শের মত। সূর্যের আলোতে যেই আসে সেই তার সুফল লাভ করে, যদিও সুফল ভোগকারী নিজেরও সে ব্যাপারে জানা না থাকে। এবং সে সুফল লাভের ইচ্ছা করুক কিংবা না করুক সূর্যের আলোর সুফল সকলের সমানভাবেই লাভ হতে থাকে। অনুরূপ বিশেষ বিশেষ বুযুর্গানে দ্বীনের সোহবতের ফয়েযও এমনি ব্যাপক হয়ে থাকে। আর এ ধরনের বুযুর্গানে দ্বীনের আলামত নিদর্শন হলো তাদের ইন্তিকালের সময় ব্যাপকভাবে মানুষের অন্তরে একটা অন্ধকারাচ্ছন্নতা এবং ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। হযরত থানবী (রহঃ) বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর সাহাবায়ে কিরাম (রাযিঃ)-এর ব্যক্ত করা একটি বাক্য উপরোক্ত কথার পক্ষে প্রমাণ বহন করে।
প্রিয়নবী হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর সাহাবায়ে কিরাম (রাযিঃ) বলেছিলেন—
والله ما انفضنا ايدينا من التراب حتى انكونا قلوبنا
অর্থাত, আল্লাহ পাকের কসম! আমরা প্রিয়নবী হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাফনকার্য সম্পন্ন করে আমাদের হাতের মাটি ধুয়ে ফেলার আগেই আমাদের অন্তরের মাঝে পরিবর্তন অনুভূত হয়েছে। হযরত থানবী (রহঃ) বলেন, মাশায়েখে কিরামের সংস্পর্শে যারা থাকে তারা সর্বদাই ঐ বুযুর্গ থেকে লাভবান ও উপকৃত হতে থাকে। এক্ষেত্রে উপকৃত ব্যক্তি তার উপকারের বিষয়টি অনুভব এবং উপলব্ধি করুক আর নাই করুক।
📖 মাজালিসে হাকীমুল উম্মত ||| পৃষ্ঠাঃ১৭২
=========🌼=========
সংগ্রহে, কারী মুহাম্মাদ বেলাল ফরাজী