আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৮৫৪: আমিন আস্তে ও জোরে বলার দলিল।

No Comments

 












জিজ্ঞাসা-১২৮৫৪: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমিন আস্তে ও জোরে বলার দলিল।

তারিখ:  ২৯/১১/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  আবু সুমাইয়া শাহজাহান শেখ থেকে।


 জবাব

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 


তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, আমিন আস্তে না জোরে বলা উত্তম এ নিয়ে ইমামদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। যেমন,

وقد اختلف الفقهاء في الجهر به وعدمه في الصلاة على قولين:

1- يسن إخفاؤه (الإسرار به) في جميع الصلوات -جهرية كانت أو سرية-، وبه قال الإمام أبو حنيفة، والإمام مالك في إحدى الروايتين عنه.

وعللوا ذلك: بأن التأمين دعاء، فاستحب إخفاؤه، كباقي الأدعية.

2- يسن أن يجهر به الإمام والمأموم فيما يجهر فيه بالقراءة، وإخفاؤه فيما يخفى فيه، وبه قال الإمام الشافعي، وأحمد، ومالك في الرواية الأخرى

অর্থাৎ ইমাম আবু হানিফা রহ. ও ইমাম মালেক রহ এর এক মতে সকল সালাতে আস্তে আমিন বলা সুন্নাত/মুস্তাহাব।


অপর পক্ষে ইমাম শাফি, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল এবং ইমাম মালেক রহ এর এক মতে জাহরি নামাজে ইমাম ও মুক্তাদি উভয়ে জোরে আমিন বলা সুন্নাত/মুস্তাহাব। 


প্রশ্ন: ক। ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালেক রহ এর দলিল কী?

উত্তর: ক। দলিল নিম্নরূপ:

হাদিস নং -০১ 

عن وائل بن حجر قال: صلى بنا رسول الله صلى الله عليه و سلم فلما قرأ غير المغضوب عليهم ولا الضالين قال آمين وأخفى بها صوته.ورواه الترمذى رقم (২৪৮) واحمد فى المسند.رقم (১৮৮৫৪) . ورواه الحاكم فى المستدرك ) ২৯১৩)وقال:هذا حديث صحيح على شرط الشيخين و لم يخرجاه.وقال الذهبى فى التلخيص: على شرط البخاري ومسلم والطيالسى (১০২৪) والدارقطنى ১/৩৩৪ والبيهقى ২/৫৭ والطبرانى فى الكبير ২২/৪৩ رقم(১০৯،১১০،১১২)

অর্থ: ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমাদেরকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়লেন। তিনি যখন غير المغضوب عليهم ولا الضالين পড়লেন, তখন আমীন বললেন এবং আমীন বলার সময় তাঁর আওয়াযকে নিম্ন করলেন। তাখরিজ: তিরমিযী-২৪৯; দারাকুতনী ১ম খ. ৩৩৪পৃ. বায়হাকী, খ.২ পৃ.৫৭


হাদিস নং -০২

عن سمرة قال : سكتتان حفظتهما عن رسول الله صلى الله عليه و سلم فأنكر ذلك عمران بن حصين وقال حفظنا سكتة فكتبنا إلى أبي بن كعب بالمدينة فكتب أبي أن حفظ سمرة قال سعيد فقلنا لقتادة ما هاتان السكتتان؟ فقال إذا دخل في صلاته وإذا فرغ من القراءة ثم قال بعد ذلك وإذا قرأ ولا الضالين قال. وكان يعجبه إذا فرغ من القراءة أن يسكت حتى يتراد إليه نفسه.اخرجه الترمذى(২৫১) واللفظ له وابوداود (۷۸۰) واحمد ৫/۲۳

অর্থাৎ সামুরা রা. বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দুটি সাকতা (নীরবতা) স্মরণ রেখেছি। ইমরান ইবনে হুসাইন রা. এটা অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন, আমরা তো একটি সাকতা স্মরণ রেখেছি। পরে আমরা মদীনায় উবাই ইবনে কা’ব রা. এর নিকট পত্র লিখলাম। তিনি উত্তর লিখে পাঠালেন যে, সামুরা সঠিক স্মরণ রেখেছে। সাঈদ বলেন, আমরা কাতাদাকে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ দুটি সাকতা কোথায় কোথায় ছিল? তিনি বললেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করতেন। আর যখন কিরাআত পাঠ সমাপ্ত করতেন। এরপর কাতাদা বলেছেন, যখন ولا الضالين পাঠ শেষ করতেন। তিনি আরো বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পছন্দ ছিল, যখন তিনি কেরাত পাঠ সমাপ্ত করতেন তখন শ্বাস স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নীরব থাকতেন। তিরমিযী (২৫১); আবূ দাউদ (৭৮০); মুসনাদে আহমদ, (৫খ, ২৩ পৃ,)।


এ হাদীস থেকে বোঝা যায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দু’সময় নীরব থাকতেন। প্রথম নীরবতা তাকবীরে তাহরীমার পর। এসময় তিনি নিঃশব্দে ছানা পড়তেন। দ্বিতীয় নীরবতা সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর। এ সময় “আমীন” বলতেন। বোঝা গেল আমীন তিনি নিঃশব্দে বলতেন।


হাদিস নং-০৩

আবূ দাউদ শরীফে (৭৭৯) কাতাদা র. হতে সাঈদে’র সূত্রে ইয়াযীদ র. এর বর্ণনায় স্পষ্ট উল্লেখ আছেــ

سكتة اذاكبر وسكتة اذا فرغ من قراءة غير المغضوب عليهم ولاالضالين

অর্থাৎ একটি সাকতা হতো তাকবীরে তাহরীমার পর, আরেকটি সাকতা হতো غير المغضوب عليهم ولاالضالين.বলার পর। দারাকুতনীও ইবনে উলায়্যার সূত্রে, তিনি ইউনুস ইবনে উবায়দের সূত্রে হাসান বসরী থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। {দ্রঃ ১ম খ, ৩৩৬পৃ, মুসনাদে আহমাদ ৫/২৩(২০৫৩০)}।


হাদিস নং -০৪

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ :إِذَا قَالَ الإِمَامُ ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقُولُوا آمِينَ فَانه مَنْ وَافَقَ قوله قول الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ .ورواه البخارى برقم -৭৮২ باب جهر المأمومين بالتأمين ومسلم )৪১০(

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলে শেষ করবে তখন তোমরা আমীন বলবে। কেননা যে ব্যক্তির আমীন বলা ফেরেশতাগণের আমীন বলার সঙ্গে মিলে যাবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। বুখারী শরীফ হাদীস নং ৭৮২; মুসলিম শরীফ হাদীস নং ৪১০


মুসলিম শরীফে আবূ মুসা আশআরী রা. এর বর্ণিত হাদীসেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِذَا قَالَ الإِمَامُ ( غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ ) فَقُولُوا آمِينَ.


অর্থাৎ ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলে শেষ করবে, তোমরা তখন আমীন বলবে। (হাদীস নং- ৪০৪)


এ দুটি হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইমাম আমীন নিঃশব্দে বলবে। অন্যথায় এভাবে বলা হতো না যে, ইমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ বলবে, তোমরা তখন আমীন বলবে। বরং বলা হতো, ইমামকে যখন আমীন বলতে শুনবে তখন তোমরা আমীন বলবে।


বিশেষ করে নাসাঈ শরীফে আবূ হুরায়রা রা. বর্ণিত হাদীসটিতে সহীহ সনদে একথাও বর্ণিত আছে যে:

فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَقُولُ آمِينَ وَإِنَّ الإِمَامَ يَقُولُ آمِينَ.


অর্থাৎ কেননা ফেরেশতারাও এসময় আমীন বলে, ইমামও আমীন বলে। (হাদীস নং ৯২৭)


ইমামও এসময় আমীন বলে কথাটি তখনই বলা চলে যখন ইমাম নিঃশব্দে আমীন বলে। ফেরেশতাগণ যেমন নিঃশব্দে আমীন বলার কারণে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এসময় ফেরেশতাগণ আমীন বলে। তদ্রুপ ইমামও নিঃশব্দে বলার কারণে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এসময় ইমামও আমীন বলে।


০৫. সাহাবী এবং তাবেয়ীগণের আমল ও ফতোয়া


০১.উমর রা. এর ফতোয়া:

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ: قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ: يُخْفِي الإِمَامُ أَرْبَعًا -: التَّعَوُّذُ، وَ بسم الله الرحمن الرحيم وَآمِينَ، وَرَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. المحلى لابن حزم

অর্থ: আব্দুর রহমান ইবনে আবী লায়লা বলেন, উমর রা. বলেছেন, ইমাম চারটি বিষয় নিঃশব্দে পড়বে। আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও রাব্বানা লাকাল হামদ। (আল মুহাল্লা, ২/২৮০)


০২. ইবনে মাসউদ রা. এর ফতোয়া:

عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، كِلاهُمَا عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: يُخْفِي الإِمَامُ ثَلاثًا الاسْتِعَاذَةُ، وَ بسم الله الرحمن الرحيم وَآمِينَ. . المحلى لابن حزم

অর্থ: ইমাম তিনটি কথা নিঃশব্দে বলবে। আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন। (আল মুহাল্লা, ২/২৮০)


০৩. উমর রা. ও আলী রা. এর আমল:

عن أبي وائل قال كان عمر وعلي رضي الله عنهما لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ ولا بالتأمين.رواه الطحاوى فى شرح معانى الآثار ১/১৫০ رقم ১২০৮ قال حدثنا سليمان بن شعيب الكيساني نا علي بن معبد نا أبو بكر بن عياش عن أبي سعيد عنه

অর্থ: আবূ ওয়াইল র. হতে বর্ণিত। উমর রা. ও আলী রা. বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ ও আমীন স্বশব্দে পড়তেন না। (তাহাবী শরীফ ১/১৫০)


০৪. ইবনে মাসউদ রা. এর আমল:

عن أبي وائل قال كان علي و ابن مسعود لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ ولا بآمين. رواه الطبراني في الكبير-৯৩০৪.وفي هذين الاثرين أبو سعد البقال، قال البخارى فيه مقارب الحديث كما فى علل الترمذى الكبير. وقال الهيثمى فى مجمع الزوائد২/১০৮ وهو ثقة مدلس

অর্থ: আবূ ওয়াইল র. বলেন, আলী ও ইবনে মাসউদ র. বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ ও আমীন স্বশব্দে পড়তেন না। তাবারানী, আল কাবীর (৯৩০৪); মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, (৪১৬০)

তাবেয়ীগণের আমল ও ফতোয়া


০৫.ইবরাহীম নাখায়ী র. এর আমল

عن مغيرة عن ابراهيم انه كان اذا كبر سكت هنيهة ، واذا قال غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين سكت هنيهة.رواه عبد الرزاق برقم-২৮৫৮

অর্থ: মুগীরা র. বলেন, ইবরাহীম নাখায়ী র. তাকবীর দিয়ে কিছু সময় নীরব থাকতেন। আবার যখন غيرالمعضوب عليهم ولا الضالين পড়তেন তখনও কিছু সময় নীরব থাকতেন। মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক (২৮৫৮)


প্রশ্ন: খ। ইমাম শাফি ও আহমদ ইবনে হাম্বল রহ এর দলিল কী?

উত্তর: খ। দলিল নিম্নরূপ:

হাদিস নং-০১

عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ

 اللهِ إِذَا قَرَأَ وَلاَ الضَّالِّيْنَ قَالَ آمِيْنَ وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهُ.

( ওয়ায়েল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ‘গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায য-ল্লীন’ বলতেন, তখন তিনি আমীন বলতেন। তিনি আমীনের আওয়াযটা জোরে করতেন। আবুদাঊদ হা/৯৩২


হাদিস নং -০২

عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ قَرَأَ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ فَقَالَ آمِيْنَ وَمَدَّ بِهَا صَوْتَهُ.

(২) ওয়ায়েল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন ‘গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায য-ল্লীন’ বলতেন তখন তাকে আমীন বলতে শুনেছি। তিনি আমীনের আওয়ায জোরে করতেন। তাখরিজ: তিরমিযী হা/২৪৮


প্রশ্ন: গ। আস্তে না জোরে বলা উত্তম?

উত্তর: ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. বলেন,

وهذا من الاختلاف المباح الذي لا يعنف فيه من فعله ولا من تركه وهذا كرفع اليدين في الصلاة وتركه

 ‘এটা ইখতিলাফে মুবাহর অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কোনো পক্ষেরই নিন্দা করা যায় না। যে কাজটি করছে তারও না, যে করছে না তারও না। এটা নামাযে রাফয়ে ইয়াদাইন করা ও না-করার মতোই বিষয়।’ সূত্র: যাদুল মাআদ ১/৭০, মিসর ১৩৬৯ হি., কুনূত প্রসঙ্গ


আমীন একটি দুআ। আতা ইবনে রাবাহ বলেন, 

آمين دعاء

         ‘আমীন হচ্ছে দুআ।’ সহীহ বুখারী-১/১০৭


লুগাতুল হাদীসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ মাজমাউল বিহারে (১/২০৫) আছে, ‘আমীন অর্থ, ইয়া আল্লাহ আমার দুআ কবুল করুন, বা এমনই হোক।’


ومعناه استجب لي أو كذلك فليكن

অতএব প্রথমেই দেখা উচিত, দুআ কি জোরে করা উত্তম, না আস্তে। যদিও জোরে দুআ করাও জায়েয এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোরেও দুআ করেছেন, তবে দুআর মূল তরীকা হল আস্তে করা। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-

ادعوا ربكم تضرعا وخفية

তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ডাক কাতরভাবে ও গোপনে। তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (সূরা আ’রাফ : ৫৫)


হযরত যাকারিয়া আ. সম্পর্কে বলা হয়েছে-

اذ نادى ربه نداء خفيا

যখন তিনি তার প্রতিপালককে ডাকলেন অনুচ্চস্বরে।-সূরা মারইয়াম- ০৩


 আমীন যেহেতু দুআ তাই কুরআন মজীদের উপরোক্ত নীতি অনুযায়ী তা আস্তে ও অনুচ্চস্বরে বলাই উত্তম।


তাছাড়া যেসব মারফূ রেওয়ায়েতে স্পষ্ট ভাষায় জোরে আমীনের কথা আছে সেগুলোর সনদ আপত্তিমুক্ত নয়; তাছাড়া কখনো কখনো জোরে আমীন বলা শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেও হতে পারে।


সারকথা হলো,  ইমাম ইবনে জারীর তাবারী র. (মৃ.৩১১ হি.) তাঁর তাহযীবুল আছার গ্রন্থে বলেছেন,

وروي ذلك عن ابن مسعود وروي عن النخعي والشعبى وابراهيم التيمى كانوا يخفون بآمين والصواب ان الخبر بالجهر بها والمخافتة صحيحان وعمل بكل من فعليه جماعة من العلماء وان كنت مختارا خفض الصوت بها إذكان اكثر الصحابة والتابعين على ذلك . (شرح البخاري لابن بطال المتوفى ৪৪৯ه باب جهر المأموم بالتأمين، والجوهر النقى

অর্থাৎ ইবনে মাসউদ রা., ইবরাহীম নাখায়ী র. শা’বী র. ও ইবরাহীম তায়মী র. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা আমীন আস্তে বলতেন। সঠিক কথা হলো আমীন আস্তে বলা ও জোরে বলার উভয় হাদীসই সহীহ। এবং দুটি পন্থা অনুযায়ী এক এক জামাত আলেম আমলও করেছেন। যদিও আমি আস্তে আমীন বলাই অবলম্বন করি, কেননা অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ী এ অনুযায়ীই আমল করতেন। (দ্রঃ শারহুল বুখারী লিইবনে বাত্তাল,মৃত্যু ৪৪৯হিজরী; আল জাওহারুন নাকী, ২খ, ৫৮পৃ,)

ইবনে জারীর র. এর এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হলো যে, অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ীর আমল ছিল আমীন আস্তে বলা। তিনি নিজেও একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস হওয়া সত্ত্বেও আস্তে আমীন বলাকেই অবলম্বন করেছেন।


  والله اعلم بالصواب