আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

লাইলাতুল ক্বাদর মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার

No Comments

 



লাইলাতুল ক্বাদর মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার

---------------------------------------------

তারিখ ১৭/০৪/২০২৩

------------------

১। লাইলাতুল ক্বাদর (ভাগ্য রজনী/ সম্মানীত রাত/মুবারক রাত) মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ উপহার তাই রাসূল সাঃ এই রাত লাভের জন্য সারা বছর অধীর আগ্ৰহ নিয়ে অপেক্ষা করতেন।সহি বোখারী।

২। জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত দানের জন্য আললাহ তায়ালা মেহেরবানী করে শুধু মাত্র মুসলিম উম্মাহ কে মাহে রামাদানের শেষ দশকের বেজোড় (২১/২৩/২৫/২৭/২৯) রাতে ক্বাদর নির্ধারন করে দিয়েছেন।

বোখারী/২০৫৬ রিয়াদুস সালেহীন/১১৯৫

৩। এই রাতেই আললাহ তায়ালা মহা গ্ৰন্থ আল কুরআন

লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আকাশে অবতীর্ণ করেন।

সূরা দুখান/৩ সূরা ক্বাদর /১ 

৪। আল্লাহ তাআলা ক্বাদর রাত্রির মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে একটি পরিপূর্ণ সূরা (ক্বাদর) নাযিল করেছেন।

সূরা ক্বাদর। সূরা নং ৯৭

৫। এই রাতের ইবাদাতের সাওয়াব ১০০০ মাস(৮৩বছর ৪মাস) সার্বক্ষনিক দিনে জেহাদ ও রাতে সকল প্রকার নফল ইবাদাতের সাওয়াবের চেয়ে ও উত্তম বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

সূরা ক্বাদর/৩

৬। এই রাতে আললাহ তায়ালা হায়াত ,মউত ,রিজিক এর মত গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় গুলোর ফায়সালা পূনঃ নির্ধারণ করেন।

সূরা দুখান/৪-৫ কুরতুবি।

৭। এই রাতে জিবরীল আমীনের নেতৃত্বে এক বিশাল ফেরেশ্তার দল পৃথিবীতে নেমে আসে এবং তারা মুমিন মুমিনাদের প্রতি কল্যান ও প্রাচুর্য বন্টন করেন।

সূরা ক্বাদর/৪

৮। এই রাতে ইবাদাতের অছিলায় বান্দার বিগত জীবনের

সকল সগীরা গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দেন।আর তওবার মাধ্যমে কবীরা গুনাহ গুলো ও ক্ষমা করে দেন।

বোখারী/২০৫৩/১৯০২ /১৭৬৬ মুসলিম/৭৬০

৯। এই রাতে একমাত্র হতভাগ্য ছাড়া অর্থাৎ (মদ্যপান কারী, পিতামাতার অবাধ্য চারী সন্তান,আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন কারী,ওমানুষের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণ কারী ) ব্যতীত কাউকে ক্বাদরের সৌভাগ্য (রহমত)থেকে বঞ্চিত করেন না।

ইবনে মাজাহ/১৭১৩ সহি তারগীব/৯৮৬

১০। এই রাতে যারা এশার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করবে আল্লাহ তাআলা তাদের কেও ক্বাদরের ফজিলত দান করেন।

মুসলিম/১৫২৩

১১। এই রাতে জীবরীল আমীন ও তাঁর সঙ্গিরা দুনিয়ার ইবাদত কারী বান্দা বান্দী কে সালাম করেন ও তাদের জন্য দোয়া করেন, তাদের সাথে মোছাফাহা করেন এবং তারা যখন দোয়া করে সে দোয়ায় শরীক হয়ে আমীন আমীন বলেন। 

মা আরেফুল হাদীস/৪/৭৬ হাদীস শরীফ/২খন্ডপৃষঠা১০০

১২। এই রাতে রাসূলে কারীম সাঃ কাতর কন্ঠে বেশি বেশি পাঠ

করতেন "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফ ওয়া ফা'ফু আননী" হে আল্লাহ তুমি মহান ক্ষমাকারী,ক্ষমা করা তুমি পছন্দ করো,অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

তিরমিযি/৩৮৫৫

১৩। কদরের রাতে আল্লাহ তাআলা রাতের প্রথম অংশে ই প্রথম আকাশে নেমে আসেন, এবং আকাশে রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেন এবং সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত বান্দার ফরিয়াদ শুনতে থাকেন।

বোখারী/

১৪। এই রাতে আললাহ তায়ালা বান্দার তওবা কবুল করেন এবং সত্তর হাজার (অসংখ্য) পাপি বান্দাকে ক্ষমা করে জান্নাতী বান্দা হিসেবে ঘোষণা দেন।

সহি তারগীব/৯৮৪

১৫। এই রাতের ইবাদাতের অছিলায় আললাহ তায়ালা এই উম্মার মর্যাদা বনি ইসরাইলের আইয়ুব আঃ,যাকারিয়া আঃ, হিযকিল আঃ ও ইউশা ইবনে নূন আঃ এর উপর মর্যাদা বৃদ্ধি

করে দেন।

তাফসিরে ইবনে কাসীর সূরা ক্বাদরের ফজিলত।

১৬। এই রাত্রির অছিলায় আল্লাহ তায়ালা হাশরের ময়দানে উম্মতে মুহাম্মাদীর মর্যাদাকে সকল নবীর উম্মতের উপর বুলুন্দ রাখতে চান।

দুররুল মানসুর

১৭। এই রাতকে গোপন রাখার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার হিকমাহ হলোঃ যাতে এই সব রাতেএই উম্মাত বেশি বেশি যিকির আযকার, দোয়া দরুদ ,নফল ইবাদত, ইতেকাফ, কুরআন তেলাওয়াত ,দান ছাদাকা,ইসতেগফার ইত্যাদী আদায়ের মাধ্যমে রাতকে খুঁজে নিতে পারে আর আল্লাহ এই অছিলায় তাদের নেকীর পাললা ভারী করে দিতে পারেন।

বোখারী/২০৬২ রিয়াদুস সালেহীন/১১৯০

১৮। এই নবীর উম্মাহর হায়াত কম তাই আললাহ তায়ালা

রহমতের বহিঃপ্রকাশের জন্য একটি রাতকে এত মহিমান্বিত করে এই নবীর উপর নাযিল করেছেন, যাতে করে প্রিয় নবীর উম্মত অল্প ইবাদত বন্দেগী করেও বেশি সাওয়াবের অধিকারী হয়ে অন্য নবীর উম্মতের চেয়ে নিজেদের মর্যাদা অনেক উচ্চে

প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। 

তাফসিরে মাআরেফুল কুরআন।

১৯। এই রাত এলে রাসূল সাঃ সমস্ত মন প্রান আবেগ উঝার 

করে ইবাদাত বন্দেগী তে আত্মনিয়োগ করতেন যা অন্য সময়

এতটা দেখা যেতো না।

তিরমিযি/৮০১

২০।মাহে রমজানের শেষের দশক এলে রাসূল সাঃ শুধু নিজেই ইবাদাতে বিভোর হতেন তা নয় বরং তার প্রিয় পরিবার বর্গকে ও সংগে নিয়ে কোমর বেঁধে ইবাদতে নিমগ্ন হতেন ।

মুসলিম/২৮৪৪

অত এব আমরা ও আমাদের প্রিয় বন্ধুর কাছে কায় মনোবাক্যে গভীর আকুতি নিয়ে ফরিয়াদ করছি তিনি যেন আমাদের কে প্রতি রামাদানে কদর রাত্রি নসিব করে দেন।হে করুনাময় আমাদের ফরিয়াদ টুকু কবুল করুন।

আমীন।

লেখক আরটি আলিফ হোসাইন

তারিখঃ২৬ রামাদান ১৪৪৪

১৭/৪/২০২৩

যশোর।