উসতাদের সংশ্রবে থেকে হাদীসের ব্যাখ্যা বুঝে নেয়া
وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
আয়াত নং- ১ : সমস্ত মুমিন যেন অভিযানে বেরিয়ে না পড়ে। তাদের প্রত্যেক দল থেকে একটি অংশ দ্বীন শিক্ষার জন্য কেন বের হলো না? যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ শেষে ফিরে এসে স্বজাতিকে সতর্ক করবে যেন তারা বাঁচতে পারে। (সূরা তাওবা: ১২২)
সারসংক্ষেপ : এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ইলম অর্জনের জন্য উসতাদের নিকটে ছুটে যেতে হয় এবং তাঁর সংশ্রবে থেকে ইলম শিখতে হয়। ইলম শিক্ষা যদি শুধু কুরআন-কিতাব দিয়ে সম্পন্ন হতো তাহলে সমাজ থেকে কিছু মানুষকে বের হয়ে গিয়ে ইলম শিক্ষার নির্দেশ অনর্থক হয়ে যেত। ফুকাহায়ে কিরাম এবং মুহাদ্দিসগণের শিক্ষাজীবন ইলম শিক্ষার তাগিদে দারে দারে ছুটে যাওয়ার একটি বাস্তব উদাহরণ। আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী রহ. (মৃত্যু- ৬০৬ হি.) এ বিষয়ে বলেন:
أَمَّا فِي زَمَانِنَا فَقَدْ صَارَتِ الشَّرِيعَةُ مُسْتَقِرَّةً، فَإِذَا أَمْكَنَهُ تَحْصِيلُ الْعِلْمِ فِي الْوَطَنِ لَمْ يَكُنِ السَّفَرُ وَاجِبًا إِلَّا أَنَّهُ لَمَّا كَانَ لَفْظُ الْآيَةِ دَلِيلًا عَلَى السَّفَرِ لَا جَرَمَ رَأَيْنَا أَنَّ الْعِلْمَ الْمُبَارَكَ الْمُنْتَفَعَ بِهِ لَا يَحْصُلُ إِلَّا فِي السَّفَرِ.
অনুবাদ : আমাদের যুগে শরীআত স্থিতিশীল হয়ে গেছে। সুতরাং কেউ যদি নিজ অঞ্চলে থেকে ইলম শিক্ষা করতে পারে তাহলে তার জন্য সফর করা আবশ্যক নয়। অবশ্য আয়াতে ব্যবহৃত শব্দ যখন সফর করা প্রমাণ করে তখন অবশ্যই কল্যাণকর এ মুবারক ইলম সফর ছাড়া হাসিল হয় না। (তাফসীরে কাবীর: সূরা তাওবার ১২২ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যায়)
হাল যামানার তাকলীদ বিরোধী কিছু মানুষ যারা কোন উসতাদ থেকে ইলম শেখেনি; বরং কুরআন-হাদীসের বাংলা অনুবাদদই যাদের পুঁজি। তারা এ বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করে বলতে শুরু করেছে যে, সব কিছুই কুরআন-কিতাবে লিখিত রয়েছে তো উস্তাদের প্রয়োজন কী? তাদের মন্তব্যের ভ্রান্তি উক্ত আয়াতটির সঠিক মর্ম না বোঝার কারণেই ঘটেছে।
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَا: حَدَّثَنَا جَرِيرٌ ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَسْمَعُونَ وَيُسْمَعُ مِنْكُمْ وَيُسْمَعُ مِمَّنْ سَمِعَ مِنْكُمْ»( رَوَاه ابُوْ دَاود فِىْ بَابِ فَضْلِ نَشْرِ الْعِلْمِ)
হাদীস নং- ৩ : হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন: তোমরা শুনবে এবং তোমাদের থেকে শোনা হবে। এরপর তোমাদের থেকে যারা শুনেছে তাদের থেকে শোনা হবে। (আবু দাউদ: ৩৬১৮)
হাদীসটির স্তর : সহীহ। আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ ব্যতীত এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই বুখারী-মুসলিমের রাবী। আর আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ ثقةٌ নির্ভরযোগ্য। (আল কাশেফ: ২৮০৯) শায়খ শুআইব আরনাউত মুসনাদে আহমাদের তাহকীকে বলেন: إسناده صحيح “হাদীসটির সনদ সহীহ”। (মুসনাদে আহমাদ: ২৯৪৫ নম্বর হাদীসের আলোচনায়) শায়খ আলবানীও হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহ-জঈফ আবু দাউদ: ৩৬৫৯)
সারসংক্ষেপ : হাদীসের শব্দ মুখ্য নয় বরং মুখ্য বিষয় হলো অর্থ। সুতরাং হাদীস
শোনার আওতায় হাদীসের শব্দ ও অর্থ উভয়টিই শামিল রয়েছে। এ হিসেবে উক্ত হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হাদীস গ্রহণ করার মাধ্যম যেহেতু উসতাদ; সেহেতু উস্তাদের মাধ্যম ব্যতীত হাদীস বর্ণনা করা যেমন অগ্রহণযোগ্য তেমনিভাবে উস্তাদের থেকে না বুঝে নিজে বুঝতে যাওয়াও অগ্রহণযোগ্য। তবে জটিল বিষয়ের ব্যাখ্যা গ্রহণের ক্ষেত্রে কুরআন-হাদীসে পারদর্শী গবেষক আলিমগণ বিভিন্ন আয়াত ও হাদীসের ইঙ্গিত থেকে এমন ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে পারেন যা অন্য কোন আয়াত বা হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।
حَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، وَهِشَامٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، وَحَدَّثَنَا فُضَيْلٌ، عَنْ هِشَامٍ قَالَ: وَحَدَّثَنَا مَخْلَدُ بْنُ حُسَيْنٍ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ: «إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِينٌ، فَانْظُرُوا عَمَّنْ تَأْخُذُونَ دِينَكُمْ»( رَوَاه مُسْلِمٌ فِىْ بَابِ في أَنَّ الْإِسْنَادَ مِنَ الدِّينِ)
হাদীস নং- ৪ : হযরত মুহাম্মাদ বিন সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত: নিশ্চয় এ ইলম হলো দ্বীন। অতএব, খুব ভালো করে লক্ষ্য করো তোমরা কার থেকে দ্বীন গ্রহণ করছ। (মুসলিম শরীফের ভূমিকা: ‘সনদ দ্বীনের অংশ’ অধ্যায়)
হাদীসটির স্তর : সহীহ। এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমাম এবং অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য রাবী।
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ قُهْزَاذَ مِنْ أَهْلِ مَرْوَ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَانَ بْنَ عُثْمَانَ يَقُولُ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الْمُبَارَكِ، يَقُولُ:الْإِسْنَادُ مِنَ الدِّينِ وَلَوْلَا الْإِسْنَادُ لَقَالَ مَنْ شَاءَ مَا شَاءَ ( رَوَاه مُسْلِمٌ فِىْ بَابِ في أَنَّ الْإِسْنَادَ مِنَ الدِّينِ)
হাদীস নং- ৫ : হযরত আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহ. বলেন: সনদ দ্বীনের অংশ। যদি সনদ না থাকত তাহলে যার যা মন চাইত সে তা-ই বলে দিত। (মুসলিম শরীফের ভূমিকা: ‘সনদ দ্বীনের অংশ’ অধ্যায়)
হাদীসটির স্তর : সহীহ। এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই নির্ভরযোগ্য রাবী।
সারসংক্ষেপ : প্রসিদ্ধ তাবিঈ এবং অন্যতম মুহাদ্দিস ও ফকীহ হযরত মুহাম্মাদ বিন সীরীন এবং প্রসিদ্ধ তাবে তাবিঈ ও যুগশ্রেষ্ট মুহাদ্দিস হযরত আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহ.-এর আছার থেকে প্রমাণিত হলো যে, নির্ভরযোগ্য উসতাদ ব্যতীত ইলমে দ্বীন গ্রহণ করা যায় না। হাদীস বর্ণনাকারী মুহাদ্দিসগণই হলেন সনদ। অথবা বলা যায় যে, হাদীস বর্ণনার সূত্র হলো সনদ। আর হাদীস সহীহ হওয়ার জন্য গ্রহণযোগ্য সনদ হলো-প্রত্যেক মুহাদ্দিস তাঁর বর্ণিত হাদীসটি উসতাদ থেকে শোনা এবং এ ধারাবাহিকতা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যমান থাকা। যদিও মাঝে-মধ্যে সংক্ষেপ করার জন্য পূর্ণ সনদ বর্ণনা করা হয় না ।
হাদীসের শব্দ বর্ণনার ক্ষেত্রে যেমন সনদের প্রয়োজন। অনুরূপভাবে হাদীসের কোন মর্মার্থ বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ তুলে ধরতে গেলে তারও সনদের প্রয়োজন। কারণ, এটাও দ্বীন। তবে মুজতাহিদ ইমামগণ কুরআন-হাদীসের আলোকে গবেষণা করে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা করতে পারেন। কিন্তু মুজতাহিদ ব্যতীত কুরআন-হাদীসে অনভিজ্ঞ সাধারণ মানুষ নিজের পক্ষ থেকে হাদীসের ব্যাখ্যা প্রদান করা দ্বীন ধ্বংসের নামান্তর। অনভিজ্ঞদের ব্যাখ্যা থেকে দ্বীনের সঠিক রূপ উদ্ধার করতে আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিদেরকে সংস্কারক হিসেবে পাঠিয়ে থাকেন। (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী: ২০৯১১, মিশকাত: ২৪৮) যোগ্য উসতাদ থেকে ব্যাখ্যা গ্রহণ না করে নিজে হাদীসের ব্যাখ্যা করা কতটা ঝুকিপূর্ণ তার একটি উদাহরণ বুখারী শরীফের হাদীস থেকে পেশ করছি :
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ فِرَاسٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ بَعْضَ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُلْنَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّنَا أَسْرَعُ بِكَ لُحُوقًا؟ قَالَ أَطْوَلُكُنَّ يَدًا، فَأَخَذُوا قَصَبَةً يَذْرَعُونَهَا، فَكَانَتْ سَوْدَةُ أَطْوَلَهُنَّ يَدًا، فَعَلِمْنَا بَعْدُ أَنَّمَا كَانَتْ طُولَ يَدِهَا الصَّدَقَةُ، وَكَانَتْ أَسْرَعَنَا لُحُوقًا بِهِ (زَيْنَبُ) وَكَانَتْ تُحِبُّ الصَّدَقَةَ(رَوَاه الْبُخَارِىُّ فِىْ بَابِ فَضْلِ صَدَقَةِ الشَّحِيحِ الصَّحِيحِ)
হাদীস নং- ৬ : হযরত আয়েশা রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স.-এর কোন কোন স্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন: আমাদের মধ্যে কে আপনার সাথে সত্বর মিলিত হবে? রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করলেন: তোমাদের মধ্যে যে অধিকতর লম্বা হাতবিশিষ্ট হবে। তাঁরা একটি বাঁশের টুকরো নিয়ে হাত মাপতে লাগলেন। তাঁদের মধ্যে হযরত সাওদাহ রা. লম্বা হাতবিশিষ্ট প্রমাণিত হলেন। হযরত আয়েশা বলেন: আমরা আরও পরে গিয়ে ঠিক পেলাম যে, লম্বা হাত দ্বারা উদ্দেশ্য অধিক সদকা করা। সে হিসেবে রসূলুল্লাহ স.-এর সাথে আমাদের মধ্যে সত্বর মিলিত হবেন হযরত যাইনাব রা.। তিনি সদকা করতে ভালোবাসতেন। (মিশকাত: ১৮৭৫, বুখারী: ১৩৩৭)
এ হাদীসের প্রতি লক্ষ্য করুন! রসূলুল্লাহ স.-এর স্ত্রীগণ প্রথমে লম্বা হাতের অর্থ বুঝেছিলেন হাতের দৈর্ঘ্য বেশী হওয়া। পরে বুঝেছেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দান করায় অগ্রগামী হওয়া। রসূলুল্লাহ স.-এর নিকট থেকে ব্যাখ্যা না জেনে নেয়ায় তাঁর সাথে এক ঘরে এক বিছানায় থেকেও যখন হাতের দৈর্ঘ্যরে মর্মার্থ বুঝতে ভুল করলেন। তখন আমরা উসতাদের সংশ্রব ব্যতীত কোন ব্যাখ্যা নির্ধারণ করে কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছি যে, এটা ভুল ব্যাখ্য নয় এবং এর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ স.-এর নামে মিথ্যা সম্বন্ধ করা হচ্ছে না?
অতএব, হাদীসের শব্দ বর্ণনার ক্ষেত্রে যেমন সনদ তথা উসতাদের মাধ্যম প্রয়োজন। অনুরূপভাবে হাদীসের মর্মার্থ বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ তুলে ধরতে গেলেও তার সনদ তথা উসতাদের মাধ্যম প্রয়োজন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. শরহে নুখবা কিতাবে হাদীস শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন: ولا يُحدِّثُ ببلدٍ فيهِ مَن هُو أَولى منهُ، بل يُرْشدُ إِليهِ. “যে অঞ্চলে তার চেয়ে বড় আলিম বিদ্যমান রয়েছে সেখানে সে হাদীস শিক্ষা দেয়ার কাজ করবে না বরং লোকদেরকে উক্ত বড় আলিমের নিকটে যাওয়ার পরামর্শ দিবে”। ইবনে হাজার রহ.-এর কথা থেকে দু’টি বিষয় বেরিয়ে আসে। এক. কুরআন-হাদীসের গভীর জ্ঞান অর্জন করা ব্যতীত কেউ যেন শিক্ষকের আসনে বসার চিন্তা না করে। দুই. দ্বীনী ইলম অর্জনকারী ছাত্রদের জন্য আবশ্যক হলো- তারা যেন এমন কারও নিকট থেকে দ্বীনী ইলম শিখতে না যায় যে নিজেই কুরআন-হাদীসে পারদর্শী নয়; বরং যোগ্য শিক্ষকের নিকট থেকে ইলমে দ্বীন শিক্ষা করবে। কারণ, উসতাদবিহীন বা অযোগ্য উসতাদ থেকে দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা কোনক্রমেই নিরাপদ নয়।
জাগতিক শিক্ষায় শিক্ষকের নিকট ক্লাস করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ব্যতীত মানুষ কারও থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে না। কোন প্রকৌশলীর প্লানও গ্রহণ করে না এবং ডাক্তারের চিকিৎসা সেবাও গ্রহণ করে না। বরং ডাক্তারদের ক্ষেত্রে মানুষ আরও বেশী সতর্কতা অবলম্বন করে থাকে যে, শিক্ষা শেষে কমপক্ষে এক বৎসর কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের অধীনে থেকে বাস্তব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা ব্যতীত তাকে চিকিৎসা সেবা প্রদানের অনুমতিই দেয়া হয় না। এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছাড়া ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা এবং প্রকৌশলী কর্তৃক বিল্ডিং-এর নকশা তৈরী রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতারণা ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাহলে যেখানে মানুষের জান্নাত/ জাহান্নামের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত সেখানে কেন উস্তাদের শিক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছাড়া যে কারও নিকট থেকে দ্বীনের ব্যাখ্যা গ্রহণ করব। ভালো চিকিৎসা সেবার জন্য যেমন একজন ভালো ডাক্তারের প্রয়োজন। বিল্ডিং-এর ভালো প্লান তৈরীর জন্য যেমন একজন ভালো প্রকৌশলী প্রয়োজন। ঠিক তেমনই দ্বীন গ্রহণের জন্য একজন যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষক প্রয়োজন; যার সংশ্রবে থেকে দ্বীন শিখতে পারি। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা কমপক্ষে স্বীকৃত আলিম থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হওয়া আবশ্যক। অন্যথায় দ্বীনের শিক্ষা কোনক্রমে সহীহ এবং নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়।*সংগৃহীত।