কেন তোমাকে নামাজ পড়তেই হবে?
*******************************
১। কারনঃ তোমাকে নামাজের জন্য ই সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন
وما خلقت الجن والانس الا ليعبدون
আর আমি জিন ও মানব জাতিকে শুধু আমার ই
ইবাদাত(নামাজ হলো শ্রেষ্ঠ ইবাদাত) করার জন্য সৃষ্টি
করেছি। ৫১ সূরা যারিয়াত/৫৬
ক। তুমি কি জানো?তোমাকে মায়ের পেটে(ভ্রুন অবস্থায়) চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত
দাঁড়িয়ে রেখে কেয়ামের ট্রেনিং দেয়া হয়েছে।
খ। তুমি কি জানো?২৪সপ্তাহ পরে তোমাকে শুনার শক্তি দেয়া হয়েছে এবং বাঁকানো অবস্থায় রেখে রুকুর ট্রেনিং দেয়া হয়েছে।
গ। তুমি কি জানো ?জন্মের সময় তোমাকে মাথা নত করে সেজদা
রত অবস্থায় পৃথিবীতে আনা হয়েছে।
**নামাজের নির্দেশ সরাসরি ৮২ বার এবং পরোক্ষ্য
ভাবে ৭০০ বারের বেশী আল কুর আনে এসেছে বিধায়
এর ট্রেনিং মায়ের পেটে দিয়েই আল্লাহ দুনিয়িতে পাঠিয়ে ছেন।
ঘ। তোমার কি স্মরন নেই ?জন্মের পরেই তোমার ডান কানে আজান বাম কানে ইকামাত দিয়ে দেয়া
হয়েছে।
**যাতে তুমি নামাজের জন্য নিজেকে তৈরি করতে
করতে পারো।
ঙ। তুমি কি লক্ষ্য করেছ ?তোমার নাক আর
কপাল কে সমান্তরাল করে কেন সৃষ্টি করা হয়েছে।
** যাতে তুমি নাক ও কপাল দিয়ে আল্লাহর
সামনে সিজদায় অবনত হতে পারো।
** পশুরা তো সেজদা করতে পারে না, ওদের
শিং আগেই মাটিতে বেঁধে যায়। ওরা করে
আনুগত্যের সেজদা।
চ। তুমি কি খেয়াল করেছ?তোমার নামাজের জন্য ই পূরা পৃথিবীটাকে আল্লাহ তাআলা
সেজার স্থান হিসাবে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।
** যাতে নামাজের সময় হলে যে কোন
স্থানে তুমি নামাজ আদায় করতে পারো।
ছ। তুমি কি ভেবে দেখেছ ? তুমি যাতে ধীর স্থীর ভাবে কিয়াম রুকু
সেজদা করতে পার তার জন্য
সেঃ ৩০ কিঃমিঃ বেগের
ছুটন্ত পৃথিবীতে মাধ্যাকরষন শক্তি র মাধ্যমে তোমাকে স্থীর রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
** যাতে তুমি সিটকে পরে না যাও।অন্যান্য
গ্ৰহ উপগ্ৰহে ভর নেই, তারা মুকত থাকতে পারে না,
তারা ঘুমায় ক্যাপসুলের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ
রেখে,না হলে ভেসে হাড়িয়ে যাবে।
জ। তুমি কি চিন্তা করে দেখেছ ? প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগ
পর্যন্ত তোমার উপর নামাজ পড়া কেন ফরজ করা হয় নাই ?
**যাতে তুমি নামাজের প্রয়োজনীয় সূরা ,দোয়া
গুলো শিখে প্রাপ্ত হয়ার পর সুন্দর করে নামাজ পড়তে পারো।
ঝ। তুমি কি লক্ষ্য করেছ ?কেন শুধু মাত্র নামাজের দিকে ই তোমাকে প্রতি দিন পাচ বার বলিষ্ঠ
কন্ঠে আহ্বান করা হয়?
**অন্য কোন ইবাদাত করার জন্য তো
এভাবে ডাকা হয়না?এর উদ্দেশ্য হলো তুমি নামাজের
কথা শোন নাই বলে পার পাবে না। নামাজ পড়তেই হবে।
ঞ। তুমি কি ভেবে দেখেছ ? শুধু মাত্র তোমাকে আল্লাহর ঘরে হাজির করার জন্য ই আল্লাহ তাআলা একস্ট্রারা মোয়াজজিনের ব্যবস্থা করেছেন।যারা প্রতি দিন ভোর বেলা শীত গ্ৰীষ্ম বর্ষা
হেমন্তে সুব্বুহুন
কুদ্দুসুন বলে তোমাকে ডাক দিয়ে যায়।
** অবুঝ প্রানী মোরগ ও তোমাকে প্রতিদিন
নামাজের জন্য ডাকে,এর পর ও নামাজ না পড়ার
আর কোন সুযোগ আছে?
২। এবার লক্ষ্য করো সমগ্ৰ বিশ্ব জগৎ নামাজের
মধ্যেই নিমগ্ন রয়েছে।
الم تر ان الله يسجد له من فى السماوات و من فى الارض
والشمس والقمر والنجوم والجبال والشجر والدواب
وكثير من الناس
আল্লাহ বলেন,তুমি কি লক্ষ্য করোনা যে, আল্লাহ
কে সিজদা করে যা কিছু আছে আকাশে ও
পৃথিবীতে -সূরয, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পর্বত মালা,
বৃক্ষলতা, জীবজন্তু, আরো সিজদা করে মানুষের
মধ্যে অনেক মানুষ। ২২ সূরা হজজ/১৮
ক। এই তুমি কি দেখো না ? পৃথিবীর সব গাছ গুলো
আজীবন নামাজের কিয়াম অবস্থায় দাড়িয়ে কত সুন্দর ভাবে চুপি চুপি রবের
প্রশংসা জ্ঞ্যাপন করছে।
• লক্ষ্য করো ,গাছ গুলো কোন ক্যালেনডার ছাড়াই সঠিক সময়ে নানা বর্ণের নানা স্বাদের ফুলে ফলে সুশোভিত হচ্ছে।
** আর ও লক্ষ্য করো,প্রতিনিয়ত মৃদু মন্দ ছন্দে বাতাস,ছায়া ,অক্সিজেন ছড়িয়ে আললাহর আনুগত্য প্রকাশ করছে।
সূরা রাহমান/৬
** এই তুমি তো শ্রেষ্ট জীব,
মানুষ হয়ে কেন নামাজের কিয়ামে দাঁড়াতে পারো না?
খ।তুমি কি লক্ষ্য করো না ? বাঘ ,ভাল্লুক,গরু ছাগল
মহিষ ভেড়া,শৃগাল কুকুর এই চতুস্পদ জনতু গুলো আজীবন মাথা নিচু করে
রুকুর হালতে আল্লাহর মহিমা প্রকাশ করে
চলেছে।
** বন্যেরা বন ছেড়ে লোকালয়ে ঢোকার জন্য
মিছিল করছে না, প্রভূর হুকুম মেনে বনেই বাস করছে।
** গৃহের পশুরা সামান্য খাবার খেয়েও তার
মালিকের বোঝা বহন করছে,, সারারাত জেগে প্রভূর বাড়ি পাহারা দিয়ে আল্লাহর আনুগত্য করছে।
** তাহলে তুমি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হয়ে, হাজারো নেয়ামত ভোগ
করে নামাজ না পড়লে ঐ ইতর প্রানীর চেয়ে ছোট
হয়ে যাবেনা?
গ। তুমি কি দেখোনা ?তোমার ই সামনে সারা জীবন
ধরে সাপ,কুমির,টিকটিকি গিরগিটি সরীসৃপ জাতীয় প্রানীগুলো বুকে ভর করে সেজদায় রত অবস্থায়
আল্লাহর প্রসংসা করে চলেছে।
**এ ছাড়া সাগর,পাহাড় ,আকাশ ও
জমিনের ১৫ লক্ষ প্রজাতির প্রানী নিজ নিজ ভাষায়
তার ই গুনগান গেয়ে চলেছে।
***এই তোমারে জ্ঞানী বানায়ে কি লাভ হলো?.যদি তোমার প্রভুর জন্য সেজদাই না করতে
পারো?
ঘ। একটু চোখ মেলে চেয়ে দেখো না?ঐ পাহাড় গুলো
যুগ যুগান্তর ধরে নিবিড় ভাবে ধ্যান মগ্ন হয়ে কত সুন্দর ভাবে তাশাহুদের বৈঠকে বসে আললাহর শুকরিয়া আদায় করে চলেছে।
** এই তুমি মানুষ হয়ে নামাজ না পড়লে ঐ পাথড়ের
চেয়ে মূল্য হীন হয়ে যাবে না?
ঙ।একটু কান খুলে শোন না?ঐ পাহাড়ের নীল ঝর্না
ধারা আর নদ নদীর কুলুকুলু কলতান , অনন্ত কাল ধরে কার
মহিমা গেয়ে চলেছে ?
**এই যে মুখের তাসবিহ শোনার জন্য তোমার রব মায়ের পেটে নাড়ীর মাধ্যমে তোমাকে খাবার খাওয়ালেন,তোমার কি দায়িত্ব নয়?নামাজে দাঁড়িয়ে সে মুখে তাঁর ই প্রশংসা করে নিজে কে ধন্য করা?
লেখক, মাওলানা আলিফ হোসাইন হাফিজাহুল্লাহু