আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৮১: ফজরের সুন্নাত বাসায় পড়ে মসজিদে আসলে দুখুলুল মসজিদ পড়া যাবে কিনা?

No Comments

 











জিজ্ঞাসা-১৮১: ফজরের সুন্নাত বাসায় পড়ে মসজিদে আসলে দুখুলুল মসজিদ পড়া যাবে কিনা?

 হাফেজ মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, রামু কক্সবাজার থেকে 


উত্তর: প্রথম কথা হলো,

جاء في "دقائق أولي النهى" (1/275) : في أوقات النهي عن الصلاة خمسة أحدها : " من طلوع الفجر الثاني إلى طلوع الشمس "

পাঁচটি সময় রয়েছে যে সময়ে সালাত নিষিদ্ধ, যার একটি হল: “সুবহে সাদিক উদয় হতে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত”। সূত্র: দাকায়িকু উলিল নুহা -১/২৭৫

فراتبة الفجر ركعتان ولكن اختلفَ أهل العلم في حكم الص لاة بعد طلوع الفجر لغير هاتينَ الركعتين, فذهبَ جمهور العلماء إلى منع الصلاة بعد طلوع الفجر إلا ركعتين،

ফজরের নামায হল দুই রাকাত, কিন্তু এই দুই রাকাত ছাড়া অন্য কিছুর জন্য ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পরে নামায পড়ার হুকুম সম্পর্কে আলেমদের মতভেদ রয়েছে, তাই অধিকাংশ আলেম দুই রাকাত ছাড়া সুবহে সাদিক পর নামায পড়া হারাম বলে মত দিয়েছেন।


দ্বিতীয় কথা হলো,

ইমাম আবু হানিফা রহ, ইমাম মালেক রহ ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ., জমহুর সাহাবা, তাবেয়ি তাবা-তাবেয়ি এবং ফোকাহায়ে কেরাম এর সুবহি সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যোদয় পর্যন্ত ফজরের চার রাকাত নামাজ ব্যতীত অন্য নফল নামাজ জায়েজ নেই।


অপর পক্ষে ইমাম শাফিয়ি রহ. , শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহ এবং বর্তমান যুগে তার অনুসারী দাবিদার আহলে হাদিসদের মতে নফল নামাজ জায়েজ আছে।


 প্রশ্ন: ক। জমহুর দলিল কী?

উত্তর: ক। জমহুর দলিল নিম্নরূপ:


হাদিস নং-০১

وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زَيْدِ بْنِ مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ نَافِعًا، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ حَفْصَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ لاَ يُصَلِّي إِلاَّ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ .بن

 হাফসা (রা.) বলেন, যখন ফজর উদিত হত, তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সংক্ষেপে (ছোট সুরা দিয়ে) পড়তেন। সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭২৩

হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا قُدَامَةُ بْنُ مُوسَى، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي عَلْقَمَةَ، عَنْ يَسَارٍ، مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ قَالَ رَآنِي ابْنُ عُمَرَ وَأَنَا أُصَلِّي، بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ فَقَالَ يَا يَسَارُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نُصَلِّي هَذِهِ الصَّلاَةَ فَقَالَ " لِيُبَلِّغْ شَاهِدُكُمْ غَائِبَكُمْ لاَ تُصَلُّوا بَعْدَ الْفَجْرِ إِلاَّ سَجْدَتَيْنِ " .

 ইয়াসার (রাহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা সুবহে সাদিকের পর ইবনে উমর (রাযিঃ) আমাকে নামায পড়তে দেখে বলেন, হে ইয়াসার! একদা আমরা এই নামায আদায়কালে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের নিকটবর্তী হয়ে বলেছিলেনঃ তোমরা এখন যারা উপস্থিত আছ, তারা আমার এই নির্দেশ অনুপস্থিত লোকদের নিকট পৌঁছায়ে দিও যে, সুবহে সাদিকের পর ফজরের ফরযের পূর্বে দুই রাকআত সুন্নত নামায ছাড়া আর কোন নামায পড়বে না।

—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১২৭৮ (আন্তর্জাতিক নং ১২৭৮)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)


হাদিস নং-০৩

عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا صَلَاةَ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ إِلَّا رَكْعَتَيِ الْفَجْرِ»

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ‘সুবহে সাদিক হওয়ার পর দুই রাকাত সুন্নত ছাড়া কোনো (নফল) নামাজ পড়া যাবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৭৫৭)


হাদিস নং-০৪

عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَرْمَلَةَ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيِّبِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا صَلَاةَ بَعْدَ النِّدَاءِ إِلَّا رَكْعَتَيِ الْفَجْرِ»

সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন- ‘(ফজরের) আজানের পর দুই রাকাত সুন্নত ছাড়া কোনো (নফল) নামাজ নেই।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৭৫৬)



হাসান বসরি, মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন ও আতা (রহ.) প্রমুখ তাবেয়িগণও একই কথা বলেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ৬৪১০; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৭৫৩)


جاء في "دقائق أولي النهى" (1/275) : في أوقات النهي عن الصلاة خمسة أحدها : " من طلوع الفجر الثاني إلى طلوع الشمس "

পাঁচটি সময় রয়েছে যে সময়ে সালাত নিষিদ্ধ, যার একটি হল: “সুবহে সাদিক উদয় হতে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত”। সূত্র: দাকায়িকু উলিল নুহা -১/২৭৫


প্রশ্ন: খ। ইমাম শাফি ও আহলে হাদিসদের দলিল কী?

উত্তর: খ। এ সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা কোন দলিল নেই। তবে দলিল নিম্নরূপ:

হাদিস নং-০১

627 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الحَسَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ، بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ» ، ثُمَّ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ: «لِمَنْ شَاءَ»

 আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে নামায আদায় করা যায়। প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে নামায আদায় করা যায়। তৃতীয়বার একথা বলার পর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে।

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৯৯ (আন্তর্জাতিক নং ৬২৭)


হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ " 

১৫২৭। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা ইবনে কানাব, কুতায়বা ইবনে সাঈদ ও ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ......... আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে, তখন বসার আগে দু'রাক’আত নামায আদায় করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস আন্তর্জাতিক নং ৭১৪-১)


প্রশ্ন: গ। জমহুরের পক্ষে জবাব কী?


উত্তর: ঘ। জমহুরের পক্ষে জবাবে বলা হয়, উপরোক্ত হাদিসদ্বয়ের উপর আমল অবশ্যই করা হবে, তবে নিষিদ্ধ সময়ে নয়। মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ পড়া মুস্তাহাব আর কয়েকটি সময় নামাজ পড়া হারাম ও মাকরুহে তাহরিম। সুতরাং হারাম ও মাকরুহ প্রধান্য পাবে।


মুস্তাহাব হওয়ার দলিল:

 ২ নং হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নামায বা যে কোন কাজে মাসজিদে প্রবেশ করলে বসার পূর্বে তাহিয়্যাতুল মাসজিদের দু’রাকাত নামায পড়া রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশ। অবশ্য এ নির্দেশটি ফরয-ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব। আর দৈনন্দিন ১২ রাকাত ছুন্নাতে মুআক্কাদার তালিকায়ও রসূল স. এ নামাযের নাম উল্লেখ করেননি। (তিরমিযী: ৪১৫) আর দৈনন্দিন আবশ্যকীয় নামাযের তালিকায়ও রসূল স. এ নামাযের নাম উল্লেখ করেননি। (বুখারী-৪৪) তাই এ সবকিছু সামনে রেখে ইমামগণ এটাকে মুস্তাহাব নির্দেশ হিসেবে গণ্য করেছেন। ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, وَالعَمَلُ عَلَى هَذَا الحَدِيثِ عِنْدَ أَصْحَابِنَا: اسْتَحَبُّوا إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ المَسْجِدَ أَنْ لَا يَجْلِسَ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ إِلَّا أَنْ يَكُونَ لَهُ عُذْرٌ এ হাদীসের উপর আমাদের সাথীদের আমল রয়েছে। কোন ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলে বসার পূর্বে তার উপর দু’রাকাত নামায আদায় করাকে তারা মুস্তাহাব মনে করেন। তবে ওযর থাকলে ভিন্ন কথা। (তিরমিযী-৩১৬)


 ইমাম তিরমিযী রহ.-এর উক্তি থেকেও প্রমাণিত হয় যে, এটা মুস্তাহাব। সাথে সাথে সাহাবায়ে কিরাম এবং তাবিঈদের আমল থেকেও পরিস্কার হয়ে যায় যে, এটা আবশ্যকীয় নামায নয়। এ বিষয়ের প্রমাণ তুলে ধরতে সাহাবায়ে কিরাম এবং তাবিঈদের আমল সংক্রান্ত কিছু বর্ণনা নিম্নে পেশ করা হলো: 

حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ مُعَاوِيَةَ يَعْنِي ابْنَ صَالِحٍ، عَنْ أَبِي الزَّاهِرِيَّةِ، قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُسْرٍ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، فَجَاءَ رَجُلٌ يَتَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، فَقَالَ: اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ، وَآنَيْتَ.

অনুবাদ : হযরত আবু যাহরিয়া রহ. বলেন, জুমআর দিনে আমি হযরত আব্দুল্লাহ বিন বুসর রা.-এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি বললেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম. খুৎবারত অবস্থায় এক লোক মানুষের গর্দান ডিঙ্গিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছিলো। তখন রসূলুল্লাহ স. তাকে বললেন: তুমি বসে পড়ো। তুমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছো এবং বিলম্ব করে ফেলেছো। (মুসনাদে আহমাদ: ১৭৬৯৭, আবু দাউদ: ১১১৮, নাসাঈ: ১৪০২, ত্বহাবী: খ--১, পৃষ্ঠা-২৫১, হাদীস নং-২১৫৬)

হাদীসটির স্তর: সহীহ। শায়খ শুআইব আরনাউত রহ. বলেন, إسناده صحيح على شرط مسلم. “হাদীসটির সনদ মুসলিমের শর্তে সহীহ”। (মুসনাদে আহমাদ: ১৭৬৯৭ নং হাদীসের আলোচনায়) হাকেম এবং ইমাম জাহাবী রহ.ও এ হাদীসের ব্যাপারে অনুরূপ মনত্মব্য করেছেন। (মুসতাদরাকে হাকেম: ১০৬১) 

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, তাহিয়্যাতুল মাসজিদের নামায পড়া জরুরী নয়। অন্যথায় রসূল স. আগত লোকটিকে বসতে না বলে আগে দু’রাকাত নামায পড়তে বলতেন। 

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ الدَّرَاوَرْدِيُّ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، قَالَ: كَانَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُونَ الْمَسْجِدَ، ثُمَّ يَخْرُجُونَ وَلاَ يُصَلُّونَ، قَالَ: وَرَأَيْت ابْنَ عُمَرَ يَفْعَلُهُ.

অনুবাদ : হযরত যায়েদ বিন আসলাম রহ. বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাগণ মাসজিদে প্রবেশ করতেন, অতঃপর বের হয়ে আসতেন। অথচ কোন নামায আদায় করতেন না। তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে উমার রা.কে এমন করতে দেখেছি। (ইবনে আবী শাইবা: ৩৪৪৭)

হাদীসটির স্তর: সহীহ মাউকূফ। হাদীসটির সকল রাবীই বুখারী-মুসলিমের রাবী।

حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ نَافِعٍ؛ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يَمُرُّ فِي الْمَسْجِدِ، وَلاَ يُصَلِّي فِيهِ.

অনুবাদ : হযরত নাফে’ রহ. বলেন, হযরত ইবনে উমার রা. মাসজিদের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করতেন অথচ সেখানে নামায পড়তেন না। (ইবনে আবী শাইবা-৩৪৪৮)

হাদীসটির স্তর : সহীহ, মাউকূফ। হাদীসটির সকল রাবীই বুখারী-মুসলিমের রাবী।

حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ: مَرَرْتُ مَعَ الشَّعْبِيِّ فِي مَسْجِدِ الْكُوفَةِ، فَقُلْتُ لَهُ: أَلاَّ تُصَلِّي ؟ قَالَ: إذنْ وَرَبِّي لاَ نَزَالُ نُصَلِّي.

অনুবাদ : হযরত আব্দুলস্নাহ বিন আওন রহ. বলেন, আমি ইমাম শা’বী রহ.-এর সাথে কুফার মাসজিদের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করলাম। আমি তাঁকে বললাম, আপনি নামায পড়বেন না? তিনি বললেন, রবের কসম, তাহলে তো আমি সর্বদা নামাযই পড়তে থাকবো। (ইবনে আবী শাইবা-৩৪৪৯)

হাদীসটির স্তর: সহীহ, মাউকূফ। হাদীসটির সকল রাবীই বুখারী-মুসলিমের রাবী।

সাহাবায়ে কিরাম এবং তাবিঈগণের উপরিউক্ত আমল ও মনত্মব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, তাহিয়্যাতুল মাসজিদের নামায পড়া জরুরী নয়। অনুরূপ আমল হযরত সালেম এবং সুআইদ বিন গাফালা রহ. থেকেও বর্ণিত রয়েছে। (ইবনে আবী শাইবা-৩৪৫০ ও ৩৪৫১)


প্রশ্ন: ঘ। প্রধান্য মত কোনটি?

উত্তর: ঘ। এ সম্পর্কে ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন,

وقد بالغَ الترمذي فحكى الإجماع على أنه لا نافلة بعد طلوع الفجر إلا ركعتي الفجر الراتبة، فقال: وَهُوَ مَا اجْتَمَعَ عَلَيْهِ أَهْلُ الْعِلْمِ كَرِهُوا أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ إِلَّا رَكْعَتَيْ الْفَجْرِ

ইমাম তিরমিজি ইজমা বর্ণনা করেছেন যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত ছাড়া ফরজের ওয়াক্ত হওয়ার পর আর কোনো নফল নামায নেই। তিনি বলেন: আহলে ইলেমগণ এর উপর একমত। তারা সুবহে সাদিক পর ফজরের দুই রাকাত ব্যতিত অন্য নফল নামাজ অপছন্দ করেছেন। সূত্র: ফিকহুল ইবাদাত, সালাতুত তাতাওওয়া-১১৬৫৫৬ (ফতোয়া নং)


সারকথা হলো, উক্ত সময়ে দুখুলুল মসজিদ আদায় করা জায়েজ হবে না।  এটাই সালাফ তথা পূর্বসূরিদের পথ। দলিল:

وقد ذهبَ إلى هذا جمعٌ من السلف، فعَنْ إبْرَاهِيمَ: قَالَ كَانُوا يَكْرَهُونَ إذَا طَلَعَ الْفَجْرُ أَنْ يُصَلُّوا إلَّا رَكْعَتَيْنِ. أخرجه ابن أبي شيبة

হজরত আবি শায়বা রহ বলেন, সালাফ তথা পূর্বসূরিদের মাজহাব হলো এর সাথে একমত, হজরত ইবরাহীম নখয়ি রহ এর সূত্রে: তিনি বলেছেন: যখন সুবহে সাদিক হল, তখন তারা দুই রাকাত ছাড়া সালাত পড়া অপছন্দ করত। তাখরিজ: ইবনে আবী শায়বা-২/২৩৫




والله اعلم بالصواب

আল্লাহ তাআলাই সকল বিষয়ে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।

উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক