আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৮৩০: একাকী নামায আদায়কারী ব্যক্তি জন্য কী ফজর, মাগরিব ও ঈশার নামাজে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করা জরুরি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৮৩০: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম। জানার বিষয় হলো, একাকী ব্যক্তির জন্য সিররী ও জাহরী নামাজে কিরাতের পার্থক্য কেমন হবে? 

তারিখ:  ০৭/১১/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  আব্দুল্লাহ আল কাফী, ময়মনসিনহ। থেকে।


 জবাব

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, একাকী নামাযের কেরাতের নিয়ম হল, যে সকল নামাজের কেরাত আস্তে পড়ার নিয়ম, যেমন- যোহর, আসর, সে সকল নামাজে কেরাত আস্তেই পড়বে।


পক্ষান্তরে যেসব ফরজ নামাজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়া হয়, যেমন- ফজর, মাগবির ও এশার নামাজ, তা যদি একাকী আদায় করা হয়— তাহলে তাতে উচ্চ স্বরে কেরাত পড়া জরুরি নয়। নিম্নস্বরে ও উচ্চ স্বরে দুইভাবেই কেরাত পড়া বা সুরা মেলানো যাবে। তবে উচ্চ স্বরে পড়া উত্তম। দলিল:

رواه ابن أبي شيبة (1/ 363) حدثنا أبو الأحوص، عن عاصم، عن الحسن ؛ في الرجل يصلي المغرب وحده، قال: «يسمع قراءته أذنيه» إسناده صحيح.

ইবনে আবী শায়বা রহ. থেকে বর্ণিত। আবু আল-আহওয়াস আমাদেরকে বলেন, আসিম থেকে, আল-হাসানের সূত্রে; একাকী মাগরিবের সালাত আদায়কারী ব্যক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন: “তার কান তার তেলাওয়াত শুনতে পায়।” তাখরিজ: মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা -১/৩৬৩


قال القدوري في مختصره مع الجوهرة النيرة (1/ 151) (ويجهر بالقراءة في الفجر وفي الركعتين الأوليين من المغرب والعشاء إن كان إماماً)... (وإن كان منفرداً فهو مخير إن شاء جهر وأسمع نفسه

ইমাম কুদুরি রহ.   বলেন, এবং  ফজরের সময় এবং মাগরিব ও এশার প্রথম দুই রাকাতে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করবেন যদি তিনি ইমাম হন। এবং যদি তিনি একা থাকেন, তবে তার ইচ্ছাধীন যদি তিনি জোরে  করতে চান এবং নিজেকে শোনাতে চান (চুপে চুপে)। সূত্র: মুখতাসার-১/১৫১


প্রশ্ন: ক। নিম্নস্বরে/নিচু আওয়াজে তেলাওয়াত বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: ক। নিচু আওয়াজে তেলাওয়াত বলতে ঠোঁট এবং জিব্বা নাড়ানো, অক্ষরগুলো নিজস্ব মাখরাজ থেকে বের হওয়া। মূল কথা হলো ব্যক্তি নিজের শব্দ নিজে শোনা। দলিল:


وقال النووي ـ رحمه الله: وأدنى الإسرار أن يسمع نفسه إذا كان صحيح السمع ولا عارض عنده من لغط وغيره، وهذا عام في القراءة والتكبير والتسبيح في الركوع وغيره، والتشهد والسلام والدعاء ـ سواء واجبها ونفلها ـ لا يحسب شيء منها حتى يسمع نفسه إذا كان صحيح السمع ولا عارض. انتهى

অর্থাৎ, আল্লামা নববী (রাহি.) বলেন, "শ্রবণশক্তির অধিকারী ব্যক্তির জন্য নীরবে তিলাওয়াতের সর্বনিম্ন স্তর হলো, আশেপাশে কোন কোলাহল না থাকলে শান্ত ও নিভৃত পরিবেশে তার পঠন অন্তত সে নিজে শুনতে পারবে।

এই বিধানটি সামগ্রিকভাবে - তিলাওয়াত, তাকবীর, রুকু -সিজদার তাসবীহ, তাশাহহুদ, সালামসহ ওয়াজিব-নফল নির্বিশেষে সকল ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য। কোলাহলমুক্ত শান্ত পরিবেশে মুসল্লী নিজের ধ্বনি যদি নিজেই শুনতে না পায়, তাহলে সেই এগুলো পাঠ করেছে বলে বিবেচিত হবেনা।" সূত্র: আলমাজমু-৩/২৫৬, ইমাম নববি রহ .


সারকথা হলো,  ফজর, মাগবির ও এশার নামায একাকী পড়লে তাতে উচ্চস্বরে কিরাত পড়া জরুরি নয়। আস্তে আস্তেও কিরাত পড়া যাবে। অবশ্য উচ্চস্বরে কিরাত পড়া উত্তম।



  والله اعلم بالصواب