আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৮৩৫: কসর নামাজের কাজা কি কসর করে পড়তে হবে?

No Comments

 

















জিজ্ঞাসা-১২৮৩৫: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। কসর নামাজের কাজা কি কসর করে পড়তে হবে? নাকি মুকিমের মত পূর্ণ নামাজ পড়তে হবে? দলিলসহ সমাধান জানতে চাই।

তারিখ:  ১১/১১/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা শাকুর হাসান, খোলাহাটি দিনাজপুর   থেকে।


 জবাব

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,

 من فاتته الصلاة في السفر ، وقضاها في الحضر ، فإنه يقضيها مقصورة كما لو صلاها في السفر ، على الراجح ؛ لأن القضاء بحسب الأداء ، وهو مذهب الحنفية والمالكية والشافعي في مذهبه القديم .

وينظر : "الموسوعة الفقهية" (27/281).

অর্থাৎ, সফররত অবস্থায় কারো নামাজ ছুটে যাওয়ার পর নিজ এলাকায় ফিরে এসে সে তার কাযা আদায় করতে মনস্থ করলে গ্রহণযোগ্য মত অনুসারে, সে কসর সালাতের কাযা আদায় করবে। কারণ ছুটে যাওয়া সেই সালাতটি সফরের অবস্থায় থাকার কারণে কসর হিসেবেই তার উপর আবশ্যক হয়েছে। তাই কাযা আদায়কালেও সেই কসর মোতাবেকই পালন করতে হবে। আর এটাই হলো হানাফী, মালেকী ও সুফিয়ান ছাওরি,  শাফেয়ী মাজহাবের পূর্বেকার মত। 

এবিষয়ে আরো বিস্তারিত অবগতির জন্য আল- মাউসূওয়াতুল ফিকহিয়্যাহ ( ২৭/২৮১) অধ্যয়ন করা যেতে পারে।


জমহুরের দলিল:

597 - حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، وَمُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالاَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:123] قَالَ: " مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَهَا، لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلَّا ذَلِكَ {وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي} [طه: 14] "، قَالَ مُوسَى: قَالَ هَمَّامٌ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ: بَعْدُ: «وَأَقِمِ الصَّلاَةَ للذِّكْرَى» ، قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَقَالَ حَبَّانُ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ

 আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ যদি কেউ কোন নামাযের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে নামাযের অন্য কোন কাফফারা নেই। (কেননা, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন) أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে নামায কায়েম কর”।

মুসা (রাহঃ) বলেন, হাম্মাম (রাহঃ) বলেছেন যে, আমি তাকে (কাতাদা রাহঃ) পরে বলতে শুনেছি, “আমাকে স্মরণের উদ্দেশ্যে নামায কায়েম কর।” 

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৭০ (আন্তর্জাতিক নং ৫৯৭)


হাদিসের ব্যাখ্যা:

عن أنس بن مالك رَضِيَ اللهُ عنه أنَّ النبيَّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم قال: ((مَن نَسِيَ صَلاةً أو نام عنها فكفَّارتُها أن يُصلِّيَها إذا ذَكرَها ))

وَجْهُ الدَّلالَةِ:

أنَّ الحديثَ يدلُّ على أنَّه يُصلِّي تلك الصَّلاةَ التي نسِيَها أو نام عنها بعينِها ووصْفِها، إنْ كانتْ مقصورةً فمقصورةً،((لقاء الباب المفتوح)) لابن عثيمين (رقم اللقاء: 26).

অর্থাৎ, ভুলে যাওয়ার কারণে অথবা নিদ্রাজনিত কারণে ছুটে যাওয়া সালাতের কাযা আদায়কালে সেই সালাতের মৌলিকত্ব, স্বকীয়তা ও বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে কাজা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ অনাদায়ী নামাজটি যদি কসর হয়ে থাকে, তাহলে কাযা আদায়কালে সেটি কসর হিসেবেই আদায় করতে হবে। আলোচ্য হাদীসের ভাষ্য এই কথারই অর্থ বহন করে। সূত্র: লিকাউল বাবিল মাফতুহ-২৬, লিইবনে উসাইমিন

أنَّ القضاءَ يَحكي الأداءَ

ثالثًا: أنَّها وجبتْ في الوقتِ كذلك، وفاتتْه كذلك، فيُراعَى وقتُ الوجوبِ لا وقتُ القَضاءِ

رابعًا: أنَّها صلاةُ سفرٍ؛ فكان قضاؤُها كأدائها في العدَد كما لو فاتتْه في الحضَر فقَضاها في السَّفرِ

خامسًا: أنَّه إنما يَقضِي ما فاتَه، ولم يفته إلا ركعتان

অর্থাৎ, পরবর্তী সময়ে কাযা করা যথাসময়ে আদায় করার প্রতিনিধিত্ব করে।

তৃতীয়ত. সালাত যেই অবস্থায় আবশ্যক হয়েছে। সেই অবস্থার অনুকরণেই কাযা করা চাই। সুতরাং এক্ষেত্রে আবশ্যক হওয়ার সময়টিই বিবেচ্য, কাযা করার সময়টি নয়।

চতুর্থত. এটি সফরকালীন সালাত। তাই তার কাযাও আদায় করা হবে সফরকালীন সালাত আদায়ের সাথে সঙ্গতি রেখে। যেমনটা করা হয়ে থাকে নিন এলাকায় অবস্থানকালীন নামাজের কাযা আদায়ের ক্ষেত্রে। সফরকালীন সময়ে সেই সালাতগুলো কাযা করতে চাইলে পূর্ণাঙ্গ রাকায়াত সহকারে সেসময় কাযা করতে হয়।

পঞ্চমত. সে কেবল নামাজেরই ঐ কাযা করছে যা তার অনাদায়ী রয়ে গেছে। আর সফরকালে তার অনাদায়ী রয়ে গেছে ( চার রাকায়াত নামাজ বিশিষ্ট সালাতের ক্ষেত্রে) কেবল মাত্র দুই রাকাত, তার চাইতে বেশী নয়।


সারকথা হলো, জমহুরের মতে  কসর নামাজের কাজা  কসর করে পড়তে হবে।



  والله اعلم بالصواب