জিজ্ঞাসা-১২৮৪০:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। ফিলিস্তিন সম্পর্কে হাদিসে কি বলা হয়েছে তা রেফারেন্স সহ খুব দরকার।
তারিখ: ১৩/১১/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আহসান হাবীব, নীলফামারী থেকে।
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ফিলিস্তিন সম্পর্কিত হাদিস নিম্নরূপ:
হাদিস নং-০১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَعِدَ الْمِنْبَرَ فَضَحِكَ فَقَالَ " إِنَّ تَمِيمًا الدَّارِيَّ حَدَّثَنِي بِحَدِيثٍ فَفَرِحْتُ فَأَحْبَبْتُ أَنْ أُحَدِّثَكُمْ حَدَّثَنِي أَنَّ نَاسًا مِنْ أَهْلِ فِلَسْطِينَ رَكِبُوا سَفِينَةً فِي الْبَحْرِ فَجَالَتْ بِهِمْ حَتَّى قَذَفَتْهُمْ فِي جَزِيرَةٍ مِنْ جَزَائِرِ الْبَحْرِ فَإِذَا هُمْ بِدَابَّةٍ لَبَّاسَةٍ نَاشِرَةٍ شَعْرَهَا فَقَالُوا مَا أَنْتِ قَالَتْ أَنَا الْجَسَّاسَةُ . قَالُوا فَأَخْبِرِينَا . قَالَتْ لاَ أُخْبِرُكُمْ وَلاَ أَسْتَخْبِرُكُمْ وَلَكِنِ ائْتُوا أَقْصَى الْقَرْيَةِ فَإِنَّ ثَمَّ مَنْ يُخْبِرُكُمْ وَيَسْتَخْبِرُكُمْ . فَأَتَيْنَا أَقْصَى الْقَرْيَةِ فَإِذَا رَجُلٌ مُوثَقٌ بِسِلْسِلَةٍ فَقَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ عَيْنِ زُغَرَ . قُلْنَا مَلأَى تَدْفُقُ . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنِ الْبُحَيْرَةِ قُلْنَا مَلأَى تَدْفُقُ . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ نَخْلِ بَيْسَانَ الَّذِي بَيْنَ الأُرْدُنِّ وَفِلَسْطِينَ هَلْ أَطْعَمَ قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنِ النَّبِيِّ هَلْ بُعِثَ قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ أَخْبِرُونِي كَيْفَ النَّاسُ إِلَيْهِ قُلْنَا سِرَاعٌ . قَالَ فَنَزَّ نَزْوَةً حَتَّى كَادَ . قُلْنَا فَمَا أَنْتَ قَالَ إِنَّهُ الدَّجَّالُ وَإِنَّهُ يَدْخُلُ الأَمْصَارَ كُلَّهَا إِلاَّ طَيْبَةَ . وَطَيْبَةُ الْمَدِينَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ قَتَادَةَ عَنِ الشَّعْبِيِّ وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ .
২২৫৬. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ..... ফাতিমা বিনতে কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার নবী (ﷺ) মিম্বরে আরোহণ করলেন এবং হাসলেন। পরে বললেনঃ তামীম দারী আমাকে একটি বিষয় বর্ণনা করেছে। বিষয়টি শুনে আমি খুশী হয়েছি। সুতরাং সে বিষয়টি তোমাদেরকে বর্ণনা করতে আমি ভাল মনে করি ফিলিস্তিনবাসী কিছু লোক জাহাজে সওয়ার হয়ে সমুদ্র যাত্রা করছিল। পথে তারা ঝড়ে পড়ে দিকভ্রান্ত হয়ে যায় এবং তারা সাগরের এক অজানা দীপে যেয়ে নিপতিত হয়। সেখানে তারা এক বিভ্রান্তকারী প্রাণীর তারা দেখা পায়। এর তুন ছিল চতুর্দিকে বিস্তৃত। তাঁরা বললঃ তুমি কে?
প্রাণীটি বলল আমি হলাম জাসসাসা (অনুসন্ধানী)।
তারা বললঃ আমাদের কিছু অনুসন্ধান দাও।
প্রাণীটি বললঃ তোমাদের আমি কিছু জানাব না এবং তোমাদের কাছে কিছু জানতেও চাইব না। বরং তোমরা এই বস্তিটির শেষভাগে চল। সেখানে এমন একজন আছে যে তোমাদের কিছু জানাতে পারবে এবং তোমাদের কাছ থেকে কিছু জানতেও চাইবে।
তারপর আমরা বস্তিটির শেষ প্রান্তে গেলাম। দেখি, সেখানে একটি লোককে জিঞ্জির দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। সে বললঃ আমাকে তোমরা যুগার (শামের এক এলাকা) ঝর্না সম্পর্কে বলতো? আমরা বললামঃ সেটি তো পানি ভর্তি। এখনো পানি সবেগে প্রবাহিত হচ্ছে। সে বললঃ তাবারীয়া উপসাগর কেমন বলতো? আমরা বললামঃ সেটি তো পানিতে পরিপূর্ণ, সবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সে বললঃ জর্ডান এবং ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী বায়সান খেজুর উদ্যানটি কেমন? এখনও কি ফল উৎপাদিত হয়? আমরা বললামঃ হ্যাঁ।
সে বললঃ নবী সম্পর্কে বলতো, তিনি কি আবির্ভূত হয়েছেন।
আমরা বললামঃ হ্যাঁ।
সে বললেনঃ মানুষ তাঁর দিকে কেমন ধাবিত হচ্ছে?
আমরা বরলামঃ খুবই দ্রুত।
তামীম দারী বলেনঃ (এই কথা শুনে) সে এমন এক লাফ দিল যে বন্ধন ছিন্ন করে ফেলছিল প্রায়।
আমরা বললামঃ তুমি কে?
সে বললঃ আমিই দাজ্জাল।
এ দাজ্জাল তায়বা ছাড়া সব ঘরেই প্রবেশ করবে। তায়বা হল মদীনা।
নোট:
এ হাদীসটি হাসান-সহীহ। কাতাদা-শা‘বী (রাহঃ) সূত্রে রিওয়ায়াতটি গারীব। একাধিক রাবী শা‘বী-ফাতিমা বিনতে কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহ সূত্রে এটি বর্ণনা করেছেন।
—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২২৫৩ (আন্তর্জাতিক নং ২২৫৩)
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
বর্ণনাকারী: ফাতিমা বিনতে কায়স (রাঃ)
হাদিস নং-০২
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلاَّ إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِي هَذَا وَمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الأَقْصَى " .
আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেনঃ উটের পিঠে হাওদা আঁটা যাবে না (সফর করা যাবে না) তিনটি মসজিদ ব্যতীতঃ এই মসজিদ, মসজিদুল হারাম ও মসজিদুল আকসা।
—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩২৫৪ (আন্তর্জাতিক নং ১৩৯৭-১)
হাদিস নং-০৩
ومن حديث أبي هريرة، رضي الله عنه، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: "لَا تَزَالُ عِصابَةٌ مِن أُمَّتي يُقاتِلونَ علَى أبوابِ دِمَشْقَ ومَا حَوْلَهُ، وعلَى أبوابِ بيتِ المَقْدِسِ ومَا حَوْلَهُ، لَا يَضُرُّهُم خِذْلانُ مَن خذَلهم، ظَاهِرِين علَى الحَقِّ إلى أنْ تَقُومَ السَّاعَةُ". أخرجه أبو يعلى (6417)، والطبراني في الأوسط (47)، وابن عدي في الكامل 7/84.
আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে লড়াই করে যাবে। তারা তাদের শক্রদের মুকাবিলায় অত্যন্ত প্রতাপশালী হবে। যারা তাদের বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। এভাবে লড়তে লড়তে তাদের নিকট আল্লাহর চূড়ান্ত নির্দেশ (কিয়ামত) এসে যাবে আর তারা এর উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকবে। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! তাদের অবস্থান কোথায় হবে? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, বাইতুল মাকদাস ও এর আশপাশের এলাকায়। তাখরিজ: তাবারানি--৬৭;আবু ইয়ালা-৬৪১৭
والله اعلم بالصواب