Menu
ভাল ডায়াবেটিক খাবার কি?
আপনি ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের জন্য যাই খান না কেন , আপনার পুষ্টি চাহিদা আর বাকি সবার মতই। এর জন্য আলাদাকোন খাবার এর প্রয়োজন নেই। কিন্তু খাবার তালিকা আপনাকে বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে বাছাই করতে হবে। বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা লাগবে। ৫ – ১০ ভাগ শরীরের ওজন কমালে অনেকাংশে রক্তচাপ , কোলেস্টেরল ও শর্করা স্বাভাবিক ভাবে কমে যাবে , যাডায়াবেটিস প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। নিয়ম মাফিক ব্যায়াম ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস – যেমন শরীর ঝরঝরে রাখতেসাহায্য করে তেমন আপনার ক্লান্তি , মানসিক সুস্থতা ও নিয়ম মাফিক জীবনের জন্য পথ প্রদর্শক হয়ে থাকবে – যাডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ প্রতিরোধ সম্ভব। মূল কথা হল , আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে নিজে থেকেই এর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। মুটিয়ে যাওয়া বা স্থুলতা হল ডায়াবেটিসের জন্য প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে টাইপ – ২ ডায়াবেটিস।আমাদের শরীরের বেশিরভাগ চর্বি জমে পেটে , যা খাদ্যনালি ও যকৃতের ( লিভার ) চারপাশে বেষ্টিত থাকে এবং এটিশরীরের ইনসুলিন নিঃসরণে বাধাপ্রাপ্ত করে। আপনি তখনি বুঝবেন যে , আপনি ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছেন যখনদেখবেন যে , মহিলাদের ক্ষেত্রে কোমড়ের বেড় – ৩৫ ইঞ্চি ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪০ ইঞ্চি এর সমান বা বেশি। অতিরিক্তশর্করা সম্রদ্ধ খাবার যেমন – সোডা , প্রক্তিয়াজাত খাবার যেমন ডোনাট , চিপস , স্পোর্টস ড্রিঙ্কস , সেরিয়াল , চকলেট , এনার্জি ড্রিঙ্কস , সফট ড্রিঙ্কস ইত্যাদি পেটের চারপাশে ও খাদ্যনালীতে চর্বি জমাতে সাহায্য করে। চিনি সমৃদ্ধ খাবার কাটডাউন করে বা কমিয়ে ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি অনেকাংশে প্রতিরোধ সম্ভব। প্ল্যানিং ডায়াবেটিক ডায়েট মানে এই না যে , আপনি আপনার প্রিয় খাবার গুলো থেকে বিরত থাকবেন। প্রথম কথা হল , আপনাকে বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে খাবার বাছাই করে নিতে হবে। কিছু মিথ বা ভুল ধারনা – আমাকে সব ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে না , আপনি সবসময়ই আপনার প্রিয় চিনি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারবেন কিন্তু পরিমিত ভাবে ও বুঝে শুনে। যেমন , আপনিচাইলেই মিষ্টি দই বা কাস্টারড ইচ্ছে মত খেতে পারেন না। খেতে পারবেন , কিন্তু খেয়াল রাখবেন যাতে এটা স্বাস্থ্যসম্মতখাবার তালিকার অন্তর্ভুক্ত থাকে। আপনাকে শর্করা খাবার বাদ দিতে হবে কি পরিমাণ শর্করা খাচ্ছেন তা খেয়াল রাখতে হবে। খেয়াল রাখবেন পাতে যেন পাউরুটি , চাল বা ভাত , পাস্তা , ওটসইত্যাদি স্টার্চ সমৃদ্ধ খাবার এর বদলে বার্লি , বাদামি বা লাল চালের ভাত , গম বা গম জাতীয় শস্য দানা ভুক্ত খাবার থাকে।কারণ শস্য দানা জাতীয় খাবার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে বেশি ভূমিকা রাখে। আমাকে স্পেশাল ডায়াবেটিক খাবার খেতে হবে পুষ্টিকর খাবারের মূলমন্ত্র সবার জন্যই প্রযোজ্য , আপনি ডায়াবেটিক বা নন ডায়াবেটিক হন না কেন , দামি ও স্পেশালডায়াবেটিক খাবার ( যা বাজারে পাওয়া যায় ) খুব একটা ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেনা। বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি ভাল সমীক্ষায় দেখা গেছে যে , অতিরিক্ত প্রোটিন জাতীয় খাবার বিশেষ করে প্রাণীজ প্রোটিন ইনসুলিন রেজিস্ট্যন্স এ ভূমিকারাখে অর্থাৎ শর্করা নিয়ন্ত্রণের মূল হরমোন এর কর্মক্ষমতা হ্রাস করে। মূল কথা হল – শর্করা , আমিষ , ও চর্বি জাতীয় খাবারযাই খান না কেন তার সুষম বণ্টন কাম্য। বিশেষত – প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি খাবার বা আন – প্রসেসড ফুড বা অপ্রক্রিয়াজাত খাবার এবং প্যাকেটহীন খাবারডায়াবেটিস সুরক্ষা বান্ধব। কি খাবার বেশি খাবেন ———
উপকারী চর্বি যেমন , বাদাম , অলিভ ওয়েল , মাছের তেল ইত্যাদি।
শাক সবজি ও ফলমূল – মূলত পরিষ্কার , টাটকা ও রঙিন শাকসবজি ভাল। জুসের থেকে ফল বেশি খেতে হবে।
দেশজ মাছ ও মুরগি।
ভাল প্রোটিন জাতীয় খাবার – যেমন , ডিম , অল্প চর্বি জাতীয় দুধ , টক দই ইত্যাদি। কি খবার কম খাবেন ——— ডিপ ফ্রাই খাবার বা অতিরিক্ত রান্না করা খাবার
প্যাকেটজাত ফাস্ট ফুড , বিশেষ করে যাতে চিনি , বেকিং করা খাবার , মিষ্টি , ডেজারট , চিপস ইত্যাদি থাকে।
সাদা পাউরুটি , চিনিযুক্ত সেরিয়াল , প্রক্রিয়াজাত পাস্তা বা চাল
প্রক্রিয়াজাত মাছ বা মাংস উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার ও স্লো রিলিজ কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট এর বিশাল ভূমিকা রয়েছে , এটি শরীরের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে , এমন কি এটিরভূমিকা চর্বি বা প্রোটিনের তুলনায় বেশি। সুতরাং কি ধরনের শর্করা জাতীয় খাবার খাচ্ছেন এ ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত।প্রক্রিয়াজাতকরণ শর্করা যেমন , সাদা পাউরুটি , চিনিযুক্ত সেরিয়াল , প্রক্রিয়াজাত পাস্তা বা চাল ছাড়াও সোডা , মিষ্টি , প্যাকেটজাত খাবার যাতে চিনি যুক্ত থাকে ইত্যাদির ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। মনযোগী হতে হবে স্লো রিলিজকার্বোহাইড্রেট ও উচ্চ আঁশযুক্ত খাবারের প্রতি। এগুলো ধীরে ধীরে শরীরে রক্তের সাথে মিশে যা ধীরে ইনসুলিন নিঃসরণেসাহায্য করে। ডাঃ ; মির্জা আসিফ আদনান মেডিকেল অফিসার সিমেড হেলথ