আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৫৪০: লোকমা দেওয়ার জন্য কোন বাক্য বলা উত্তম।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৫৪০:

আসসালামু আলাইকুম।

মুক্তাদি আল্লাহু আকবার বলে লুকমা দেয়ার দলীল দরকার। মায়াচ্ছালাম

তারিখ:  ১৩/০৪/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা জমির উদ্দিন, কুষ্টিয়া থেকে


  জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 


তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, নামাজের মধ্যে ইমামের কোন ভুল হলে তাকে সতর্ক করার জন্য সুবহানাল্লাহ বলা সুন্নাত তবে আল্লাহু আকবার বা অন্য তাসবিহ বলাও জায়েজ।

দলিল: 


হাদিস নং -০১

، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ بَلَغَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ بِقُبَاءٍ كَانَ بَيْنَهُمْ شَىْءٌ، فَخَرَجَ يُصْلِحُ بَيْنَهُمْ فِي أُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَحُبِسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَحَانَتِ الصَّلاَةُ، فَجَاءَ بِلاَلٌ إِلَى أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنهما ـ فَقَالَ يَا أَبَا بَكْرٍ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ حُبِسَ وَقَدْ حَانَتِ الصَّلاَةُ، فَهَلْ لَكَ أَنْ تَؤُمَّ النَّاسَ قَالَ نَعَمْ إِنْ شِئْتَ. فَأَقَامَ بِلاَلٌ الصَّلاَةَ، وَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ فَكَبَّرَ لِلنَّاسِ، وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمْشِي فِي الصُّفُوفِ يَشُقُّهَا شَقًّا، حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، فَأ يُصَلِّيَ، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ يَدَهُ، فَحَمِدَ اللَّهَ، ثُمَّ رَجَعَ الْقَهْقَرَى وَرَاءَهُ حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ، وَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى لِلنَّاسِ، فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا لَكُمْ حِينَ نَابَكُمْ شَىْءٌ فِي الصَّلاَةِ أَخَذْتُمْ بِالتَّصْفِيحِ إِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ، مَنْ نَابَهُ شَىْءٌ فِي صَلاَتِهِ فَلْيَقُلْ سُبْحَانَ اللَّهِ ". ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ فَقَالَ " يَا أَبَا بَكْرٍ، مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ لِلنَّاسِ حِينَ أَشَرْتُ إِلَيْكَ ". قَالَ أَبُو بَكْرٍ مَا كَانَ يَنْبَغِي لاِبْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم.

কুতাইবা (রাহঃ) ... সাহ‌ল ইবনে সা’দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছল যে, কুবায় বনূ আমর ইবনে আওফ গোত্রে কোন ব্যাপার ঘটেছে। তাদের মধ্যে মীমাংসার উদ্দেশ্যে তিনি কয়েকজন সাহাবীসহ বেরিয়ে গেলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেখানে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে নামাযের সময় হয়ে গেল। বিলাল (রাযিঃ) আবু বকর (রাযিঃ) এর কাছে এসে বলেন, হে আবু বক‌র! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কর্মব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে নামাযের সময় উপস্থিত। আপনি কি লোকদের ইমামতী করবেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ যদি তুমি চাও। তখন বিলাল (রাযিঃ) নামাযের ইকামত বললেন এবং আবু বক‌র (রাযিঃ) এগিয়ে গেলেন এবং তাক‌বীর বললেন।


তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাশরীফ আনলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ তখন তাস্‌ফীক‌ করতে লাগলেন। সাহ্‌ল (রাযিঃ) বললেন, তাস্‌ফীক‌ মানে তাস‌ফীক (হাতে তালি দেওয়া) তিনি আরো বললেন, আবু বক‌র (রাযিঃ) নামাযে এদিকে সেদিকে তাকাতেন না। মুসল্লিগণ বেশী (হাত চাপড়াতে শুরু) করলে, তিনি লক্ষ্য করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে দেখতে পেলেন। তিনি তাঁকে ইশারায় নামায আদায় করার আদেশ দিলেন। তখন আবু বক‌র (রাযিঃ) তাঁর দু’হাত তুললেন এবং আল্লাহর হাম‌দ বর্ণনা করলেন। তারপর পিছু হেঁটে পিছনে সরে এসে কাতারে দাঁড়ালেন। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সামনে এগিয়ে গেলেন এবং মুসল্লীগণকে নিয়ে নামায আদায় করলেন।


নামায শেষ করে তিনি মুসল্লীগণের দিকে মুখ করে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমাদের কি হয়েছে? নামাযে কোন ব্যাপার ঘটলে তোমরা হাত চাপড়াতে শুরু করো কেন? হাত চাপড়ান তো মেয়েদের জন্য। নামাযরত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে পুরুষরা সুব‌হানাল্লাহ বলবে। তাখরিজ: বুখারি-১২১৮



হাদিস নং -০২

- عَنْ ابْنِ بُحَيْنَةَ أَنَّ النَّبِيَّ اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى فَقَامَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ فَسَبَّحُوا فَمَضَى فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ.

ইবন বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতে দু’রাকআতের পরে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন সাহাবায়ে কিরাম “সুবহানাল্লাহ” বলে উঠলেন। কিন্তু তিনি সালাত চালিয়ে গেলেন। তারপর যখন তিনি সালাতের শেষ অবস্থায় পৌছলেন, তখন দু’টি সিজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। (সুনানে নাসায়ী, হাদিস নং- ১১৭৮, হাদিসের মান: সহিহ )


এ ব্যাপারে শায়েখ ইবনে বাজ রহ কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি জবাবে বলেন,

لا مانع أن يرفع صوته بقوله: الله أكبر! أو سمع الله لمن حمده للتنبيه أنه يصلي أو يقول: (سبحان الله) لا مانع منه، أما (من) فلا حاجة إليها، لا حاجة أن يقول: من، لكن يقول: الله أكبر، أو سبحان الله حتى ينتبه من يريد تنبيهه. نعم

অর্থাৎ আল্লাহ আকবার অথবা সুবহানাল্লাহ অথবা সামিয়াল্লাহু হুলিমান হামিদা দ্বারা ইমামকে সতর্ক করতে কোন বাধা নেই। সূত্র: তাতবিকু মাউসুআতুল ফাতাওয়াল বাজিয়া, শায়েখ ইবনে বাজ রহ এর ওয়েব সাইট থেকে



সারকথা হলো,  নামাযে ইমামের কোনো ভুল হলে “সুবহানাল্লাহ” বলে লোকমা দেওয়াই সুন্নাহ, এটাই আইম্মায়ে আরবার  সিদ্ধান্ত। 

 কেউ যদি “আল্লাহু আকবার “বলে লোকমা দেয়, তাহলে তার নামাযে কোনো সমস্যা হবে না। তবে সুন্নাহ হচ্ছে “সুবহানাল্লাহ” বলেই লোকমা দেয়া। আর সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করাই আমাদের কর্তব্য।


 

 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক