প্রেসক্রিপশনে লেখা কোন সংকেতের কী অর্থ বহন করে।
‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’ হলেও আমরা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ি। আর অসুস্থ হলেই আমাদের যেতে হয় ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তখন রোগের অবস্থা বুঝে চিকিৎসা করেন। হাতে ধরিয়ে দেন একটা প্রেসক্রিপশন। অনেক সময়ই আমরা সেই প্রেসক্রিপশনের লেখা বুঝতে পারি না। তখন সাহায্য নিই প্রেসক্রিপশনে অভিজ্ঞ মানুষের। তবে প্রেসক্রিপশনে ডাক্তাররা শুধু ওষুধই লেখেন না, সেখানে থাকে কিছু সাংকেতিক চিহ্ন। যার অর্থ আবার আমরা অনেকেই জানি না।
রোগীর কাছে চিকিৎসকরা আশীর্বাদতুল্য। অসুখ বুঝে তারা নিরাময়ের পথ বাতলে দেন প্রেসক্রিপশনে। তবে শুধু কি রোগ আর ওষুধের নামই ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে লেখেন? তা কিন্তু নয়। ওষুধের নামের সঙ্গে তিনি আরও কিছু সাংকেতিক ভাষা লেখেন। অনেক সময় এমন কিছু শব্দ বা চিহ্ন সেই প্রেসক্রিপশনে থাকে, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়ে ওঠে না। চলুন জেনে নেয়া যাক, তেমনই কিছু ডাক্তারি পরিভাষা সম্পর্কে।
প্রতিটি প্রেসক্রিপশনের একটি গঠন থাকে, তা নিয়ে পরে আলোচনা করছি। আপাতত আমাদের যা মাথায় রাখতে হবে তা হলো, কিছু সংক্ষিপ্ত নাম বা অক্ষর। যেগুলো চিকিৎসকরা তাদের প্রেসক্রিপশনের মধ্যে রোগীর রোগ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধের নাম ইত্যাদির লেখার কাজে ব্যবহার করে থাকেন।
আরও পড়ুন: ফলের গায়ে লাগিয়ে রাখা স্টিকারের অর্থ কী?
১. ওষুধের বিভিন্ন ধরন বোঝাতে যে সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করেন
tab = ট্যাবলেট = tablet.
Cap = ক্যাপসুল = Capsule.
Syp = সিরাপ = Syrup.
Inj = ইনজেকশন = injection.
IV Inj = শিরায় ব্যবহৃত ইনজেকশন = injection Iv.
IM Inj = মাংসপেশিতে ব্যবহৃত ইনজেকশন = injection IM.
oint = মলম = ointment.
২. কখন ও কীভাবে ব্যবহার করতে হবে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত নাম
আর এক্স: চিকিৎসা
কিউ: প্রত্যেক
কিউ ডি: প্রতি দিন
কিউ ও ডি: এই দিন ছাড়া প্রতিদিন
কিউ এইচ: প্রতি ঘণ্টায়
এস: বাদ দিয়ে
সি: সঙ্গে
এস ও এস: জরুরি ভিত্তিতে করণীয়
এ সি: খাবার খাওয়ার আগে
পি সি: খাবার খাওয়ার পরে
বি আই ডি: দিনে দুবার
টি আই ডি: দিনে তিনবার
বি ডি/ বি ডি এস: দিনে দুবার ওষুধ নিতে হবে
টি ডি এস: দিনে তিনবার ওষুধ নিতে হবে
কিউ টি ডি এস: দিনে চারবার ওষুধ নিতে হবে
বিটি: শোয়ার সময়
বিবিএফ: প্রাতরাশের আগে
৩. শরীর সম্পর্কে কিছু সংক্ষিপ্ত ব্যবহার করা নাম বা অক্ষর
Bp = ব্লাড প্রেশার বা রক্তের চাপ
HR = হার্ট রেট বা হৃদ্স্পন্দন
PR = পালস রেট
T = তাপমাত্রা
BSF = ব্লাড সুগার ফাস্টিং
usg = আল্ট্রাসনোগ্রাফি
CXR = চেস্ট/বুক এক্সরে
RR = রেসপিরেশন বা শ্বাসপ্রশ্বাস
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী অর্থ
৪. প্রেসক্রিপশনে ব্যবহৃত কিছু সংক্ষিপ্ত নাম
OPD = আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট। অর্থাৎ, রোজ যে রোগী হাসপাতালে ডাক্তার দেখান কিন্তু ভর্তি থাকেন না, এমন রোগীদের ক্ষেত্রে OPD ব্যবহার করা হয়।
IPD = ইন পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট। অর্থাৎ, হাসপাতলে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করান, এমন রোগীদের ক্ষেত্রে IPD ব্যবহার করা হয়।
C/O = কেয়ার অফ। অর্থাৎ, রোগী যখন তার শারীরিক সমস্যা ডাক্তারকে বলেন, সে ক্ষেত্রে কেয়ার অফ লিখে সে সমস্যাগুলো লিখে রাখেন।
o/e = অন এক্সামিনেশন। অর্থাৎ, ডাক্তার রোগীকে দেখে যা বোঝেন, তা লিখে রাখেন অন এক্সামিনেশন লেখার পর।
Rx = প্রেসক্রিপশন। অর্থাৎ, রোগীকে যে ওষুধগুলো বলবেন, সেগুলো লেখার আগে Rx লেখেন।
Hx = হিস্ট্রি। অর্থাৎ, রোগীর আগে যেসব সমস্যা ছিল, সেগুলো লিখে রাখেন।
Sx = সিমটমস। অর্থাৎ, রোগীর কী কী লক্ষণ রয়েছে।
Dx = ডায়াগনসিস। অর্থাৎ রোগী কি রোগে ভুগছেন, সেটি পরীক্ষার পর লিখে রাখেন।
৫. ওষুধের পরিমাণ বা ডোজ
ml = মিলি লিটার
mg = মিলি গ্রাম
তবে মনে রাখবেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানভেদে এই সংকেত বদলাতেও পারে। অনেক সময় চিকিৎসকরা অন্যভাবেই নির্দেশ লিখতে পারেন। ফলে এ-সংক্রান্ত কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে সরাসরি চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করাই ভালো।
সূত্রঃ লাইফস্টাইল, সময় মিডিয়া লিমিটেড।
সংগ্রহে- খন্দকার মুহাম্মাদ মনজুরুর রহমান (অবসরপ্রাপ্ত)।