দু‘আ-১০৩
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ فِيْ قَلْبِيْ نُوْرًا، وَفِيْ بَصَرِيْ نُوْرًا، وَفِيْ سَمْعِيْ نُوْرًا، وَعَنْ يَّمِيْنِيْ نُوْرًا، وَعَنْ شِمَالِيْ نُوْرًا، وَمِنْ خَلْفِيْ نُوْرًا، وَمِنْ أَمَامِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ لِيْ نُوْرًا، وَفِيْ عَصَبِيْ نُوْرًا، وَفِيْ لَحْمِيْ نُوْرًا، وَفِيْ دَمِيْ نُوْرًا، وَفِيْ شَعْرِيْ نُوْرًا، وَفِيْ بَشَرِيْ نُوْرًا، وَفِيْ لِسَانِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ فِيْ نَفْسِيْ نُوْرًا، وَأَعْظِمْ لِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْنِيْ نُوْرًا، وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِيْ نُوْرًا،
وَ مِنْ تَحْتِيْ نُوْرًا، اَللّٰهُمَّ اَعْطِنِيْ نُوْرًا.
ইয়া আল্লাহ! আলো দিন আমার অন্তরে, আলো দিন আমার দৃষ্টিতে, আলো দিন আমার শ্রবণশক্তিতে, আলো দিন আমার ডানে, আলো দিন আমার বামে, আলো দিন আমার পিছনে, আলো দিন আমার সামনে, আলো দিন আমাকে এক বিশেষ আলো, আলো দিন আমার ধমনীতে, আলো দিন আমার গোশতে, আলো দিন আমার রক্তে, আলো দিন আমার চুলে, আলো দিন আমার চামড়ায়, আলো দিন আমার জিহ্বায়, আলো দিন আমার প্রাণে, আলো দিন আমাকে - বড় আলো, পরিণত করুন আমাকে আলোতে, আলো দিন আমার উপরে, আলো দিন আমার নীচে, ইয়া আল্লাহ! আমাকে আলো দিন।
-বুখারী, মুসলিম
মতন বা মূল হাদিস:
6316 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: بِتُّ عِنْدَ مَيْمُونَةَ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَتَى حَاجَتَهُ، فَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ، ثُمَّ نَامَ، ثُمَّ قَامَ، فَأَتَى القِرْبَةَ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا بَيْنَ وُضُوءَيْنِ لَمْ يُكْثِرْ وَقَدْ أَبْلَغَ، فَصَلَّى، فَقُمْتُ فَتَمَطَّيْتُ، كَرَاهِيَةَ أَنْ يَرَى أَنِّي كُنْتُ أَتَّقِيهِ [ص:70]، فَتَوَضَّأْتُ، فَقَامَ يُصَلِّي، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَتَتَامَّتْ صَلاَتُهُ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ، وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ، فَآذَنَهُ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ، وَكَانَ يَقُولُ فِي دُعَائِهِ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا، وَفِي بَصَرِي نُورًا، وَفِي سَمْعِي نُورًا، وَعَنْ يَمِينِي نُورًا، وَعَنْ يَسَارِي نُورًا، وَفَوْقِي نُورًا، وَتَحْتِي نُورًا، وَأَمَامِي نُورًا، وَخَلْفِي نُورًا، وَاجْعَلْ لِي نُورًا» قَالَ كُرَيْبٌ: وَسَبْعٌ فِي التَّابُوتِ، فَلَقِيتُ رَجُلًا مِنْ وَلَدِ العَبَّاسِ، فَحَدَّثَنِي بِهِنَّ، فَذَكَرَ عَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشَعَرِي وَبَشَرِي، وَذَكَرَ خَصْلَتَيْنِ،
৫৮৭৭। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি মায়মুনা (রাযিঃ) এর ঘরে রাত কাটালাম। তখন নবী (ﷺ) উঠে তার প্রয়োজনাদি সেরে মুখ-হাত ধুয়ে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পরে আবার জেগে উঠে পানির মশকের নিকট গিয়ে এর মুখ খুললেন। এরপর মাঝারি রকমের এমন উযু করলেন যে; তাতে বেশী পানি লাগালেন না। অথচ পুরা উযুই করলেন। তারপর তিনি নামায আদায় করতে লাগলেন। তখন আমিও জেগে উঠলাম। তবে আমি কিছু দেরী করে উঠলাম। এজন্য যে, আমি এটা পছন্দ করলাম না যে, তিনি আমার অনুসরণকে দেখে ফেলেন। যা হোক আমি উযু করলাম। তখনও তিনি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিলেন। সুতরাং আমি গিয়ে তাঁর বামদিকে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন তিনি আমার কান ধরে তার ডানদিকে আমাকে ঘুরিয়ে নিলেন।
এরপর তার তেরো রাকআত নামায পূর্ণ হলো। তারপর তিনি আবার কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি নাকও ডাকতে লাগলেন। তার অভ্যাস ছিল যে, তিনি ঘুমে নাক ডাকতেন। এরপর বিলাল (রাযিঃ) এসে তাঁকে জাগালেন। তখন তিনি নতুন উযু না করেই নামায আদায় করলেন। তার দুআর মধ্যে এ দুআও ছিলঃ “ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে, আমার চোখে, আমার কানে, আমার ডানে-বামে, আমার উপর-নীচে, আমার সামনে-পেছনে এবং আমার জন্য নূর দান করুন।
কুরায়ব (রাহঃ) বলেন, এ সাতটি আমার তাবুতের মত। এরপর আমি আব্বাস রাঃ এর পুত্রদের একজনের সঙ্গে সাক্ষাত করলাম, তিনি আমাকে এ সাতটি অঙ্গের কথা বর্ণনা করলেন এবং রগ, গোশত, রক্ত, চুল ও চামড়ার উল্লেখ করলেন এবং আরো দুটির কথা উল্লেখ করেন।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮৭৭ (আন্তর্জাতিক নং ৬৩১৬)
ফায়দা: মসনবীর ভাষায়-
نور او در يمن و يسر وتحت وفوق ٭ بر سر و بر گردنم مانند طوق
তাঁর আলো ডানে-বামে, উপরে-নীচে, মাথার উপর ও আমার কাঁধে যেন এক আলোর বেড়ি।
হাকীমুল উম্মত হযরত থানভী রহ. ‘আশ-শরীয়া’ শীর্ষক ওয়াযে বলেন-
‘এ আলো প্রদীপের আলো নয়; বরং এক বিশেষ অবস্থা। কারণ, আলোর সংজ্ঞা হল, যে নিজেও প্রকাশিত, অন্যকেও প্রকাশিত করে।
اَللهُ نُوْرُ السَّمٰواتِ وَالْاَرْضِ এখানে নূরের এ অর্থই উদ্দেশ্য। নূর অর্থ ‘ঝলক’ নয়; নূর অর্থ, যে নিজেও স্পষ্ট আর অন্যান্য সত্য ও বাস্তবতাকেও যে স্পষ্ট করে তোলে। অন্তরে এ নূর পয়দা হলে যুলমাত ও অন্ধকার দূর হয়। কোন অন্ধকার? অলসতার অন্ধকার, হিংসা-বিদ্বেষের অন্ধকার, অহংকার ও ক্রোধের অন্ধকার, অনাচার ও পাপাচারের অন্ধকার ইত্যাদি। তো নূর এ সকল অন্ধকার দূর করে এবং উদ্যম ও প্রফুল্লতা আনয়ন করে।’