আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -২০৫: নারীদের মসজিদে গমন প্রসঙ্গে

No Comments


জিজ্ঞাসা-২০৫: উক্ত হাদিসের বরাতে হানাফিপন্থি এক শায়েখের কিতাবে পেলাম,কাতারে আগে পুরুষ অতপর বালক অতপর মহিলা গণ দাঁড়াবেন।বিজ্ঞ ওলামায়ে কিরামগণের নিকট আমার জানার আগ্রহ  যে,পুরুষবালকমহিলা বিষয় সরাসরি কোন হাদিস বা  দলিল আছে কিনা। মহান আল্লাহ সকলের ইজ্জত বুলন্দ করুক,আমিন।   (তারিখ২৫/০৬/২০২২ ঈসায়ি/ইংরেজি) আমিন। 

মাওলানা মোঃ ছাদেকুল ইসলাম  রংপুর থেকে


জবাব:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ صُفُوفِ الرِّجَالِ أَوَّلُهَا وَشَرُّهَا آخِرُهَا وَخَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا.৫৮

 

অর্থ- আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিততিনি বলেন- রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:- পুরুষদের জন্য (সালাতে) উত্তম সফ হলো প্রথম সফ (সারি)আর তাদের জন্য মন্দ সফ হলো একদম পিছনের সফ। আর মহিলাদের জন্য উত্তম সফ হলো সর্বশেষ সফ (সারি)আর তাদের জন্য মন্দ সফ হলো প্রথম সফ।৫৯

মহিলা যদি মাত্র একজনও হয় তবুও তাকে পুরুষের সারিতে নিয়ে আসা যাবে না বরং তাকে পিছনে এবং পৃথক সারিতে দাঁড়াতে হবে।

আমাদের দেশের বর্তমান যে সমাজ ব্যবস্থা এবং আমাদের সামাজের যে বেহাল দশাএতে মহিলাদের মাছজিদে না যেয়ে বরং নিজ নিজ গৃহে সালাত আদায় করা আবশ্যক। তাছাড়া এমনিতেই তো মহিলাদের জন্য মাছজিদের পরিবর্তে নিজ নিজ ঘরে সালাত আদায় করা উত্তম। যেমন-

 

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: خَيْرُ مَسَاجِدِ النِّسَاءِ قَعْرُ بُيُوتِهِنَّ.৬০

 

অর্থ- উম্মু ছালামাহ  হতে বর্ণিত হাদীছে রয়েছে যেরাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:- মহিলাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম মাছজিদ হলো তাদের গৃহাভ্যন্তর।৬১

তবে হ্যাঁযদি পূর্ণ পর্দার সাথে মহিলাদের মাছজিদে আসা-যাওয়াতাদের নিরাপত্তা এবং পুরুষ-মহিলার সংমিশ্রণ না হওয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হয়তাহলে মহিলাদেরকে জামাআতে সালাত আদায়ের জন্য মাছজিদে আসা থেকে বারণ করা যাবে না।

 

উত্তর দিচ্ছেন, মাওলানা মুবারক (নারায়ণঞ্জ)

 

সম্পূরক উত্তর:

 

জবাব:  আলহামদুলিল্লাহ আমার স্নেহের ছোট ভাই মাওলানা  রায়হানুল মুবারক (সোনারগা,নারায়ণঞ্জ) এ বিষয়ে সুন্দর দলিলভিত্তিক আলোচনা করেছেন। আমি সাথে একটু যুক্ত করতে চাচ্ছি; যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে এটি একটি আলোচিত মাসয়ালা। নারীদের ফেতনা সর্বত্র, এমতাবস্থায় তাদের জন্য জামাতে শরিক হওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত। আলোচনা সুবিধার জন্য কয়েকভাগে ভাগ করছি-

 

প্রশ্ন:     ক।          মহিলাদের জন্য জামাতের নামাজ পড়া আবশ্যক কিনা?


উত্তর:   ক।          না, ইসলামি শরিয়ত নারীদের ওপর জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা আবশ্যক করেনি। দলিল:

 

হাদিস নং-০১

আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুল () বলেন, ‘জামাতে জুমার নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের ওপর অকাট্য ওয়াজিবতবে ক্রীতদাসনারীশিশু ও অসুস্থ ব্যক্তির ওপর ওয়াজিব নয়।
তাখরিজ: আবু দাউদ- ১০৬৭

 

নোট: ইমাম হাকেম রহ. বলেন,
হাদিসটি ইমাম বুখারি ও মুসলিম (রহ.)-এর শর্ত অনুযায়ী সহিহ। সূত্র: আল মুস্তাদরাক : ১/২৮৮

 

হাদিস নং-০২

হজরত মুহাম্মদ ইবনে কাব আল কুরাজি (রহ.) বলেন,, রাসুল () বলেন, ‘নারী ও দাসের ওপর জুমার নামাজ নাই। তাখরিজ:
মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক-৫১৯৬


নোট: হাদিসটির সনদ  সহিহ

 

হাদিস নং-০৩

যেসব পুরুষ প্রয়োজন ছাড়া মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ পড়েতাদের বিষয়ে রাগান্বিত হয়ে রাসুলুল্লাহ () বলেন, ‘যদি ঘরগুলোতে নারী ও শিশুরা না থাকততাহলে আমি এশার নামাজের ইমামতির দায়িত্ব অন্যজনকে দিয়ে কিছু যুবকদল দিয়ে তাদের ঘরের সব কিছু
জ্বালিয়ে দিতাম। তাখরিজ: মুসনাদে আহমাদহাদিস : ৮৭৯৬


এতে বোঝা যায়যখন নামাজের জামাত চলতে থাকেতখন নারীরা ঘরে থাকে।

 

প্রশ্ন:            রসূল  (ﷺ)-এর   যুগে কি কি শর্ত সাপেক্ষে মসজিদে আসার অনুমতি ছিল?

উত্তর:       খ।   রাসুলুল্লাহ ()-এর যুগে মহিলাদের যে মসজিদে আসার অনুমতি ছিলতা-ও অনেক শর্তসাপেক্ষ ছিল।
যথা
.
(ক)সম্পূর্ণ আবৃত ও পূর্ণ শরীর ঢেকে বের হবে।

দলিল:  আয়েশা রা.বর্ণনা করেন-
كن نساء المؤمنات يشهدن مع رسوالله صلي الله عليه و سلم صلاة الفجر متلفعات بمروطهن ثم ينقلبن الي بيوتهن حين يقضين الصلاة لا يعرفهن أحد من الغرس .
মুমিন নারীগণ মোটা চাদরে আবৃত হয়ে রাসূল স.-এর সাথে ফজরের জামাতে হাযির হতেন । বড় চাদরে তাদের মাথা পা পর্যন্ত ঢাকা থাকতো। নামায শেষে ঘরে ফেরার সময়েও ভোরের অন্ধকারের কারণে কেউ তাদের চিনতে পারতো না। বুখারী : ৫৭৮
.
(খ) সেজে-গুজে খুশবু লাগিয়ে বের না হওয়া। দলিল: 


قال لنا رسول الله صلي الله عليه وسلم اذاشهدت احداكن المسجد فلا تمس طيبا. (مسلم)
রাসূল () আমাদের সম্বোধন করে বলেনতোমাদের কেও যদি মসজিদে গমন করে তাহলে সে যেনো সুগন্ধি ব্যবহার না করে। তাখরিজ: মুসলিম-৪৪৩


.
(গ) বাজনাদার অলংকারচুড়ি ইত্যাদি পরে আসতে পারবে না। দলিল:  
 হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত রাসূল স. ইরশাদ করেন-
لا تمنعوا إماء الله مساجد الله ولكن ليخرجن وهن تفلات. (رواه أحمد في مسند و اسناده صحيح)
আল্লাহর বান্দীদের মসজিদ থেকে বারণ করো না। তবে তারা সাজসজ্জা পরিপূর্ণ পরিহার করে আসে। তাখরিঝ: মুসনাদে আহমদ : ৯৬৪৫আবু দাউদ-৫৬৫


.
(ঘ) অঙ্গভঙ্গি করে চলতে পারবে না।

 

(ঙ) মসজিদে ও পথে নারী পুরুষের সংমিশ্রণ না ঘটা

.
দলিল: হযরত উম্মে সালমা রা. বর্ণনা করেন 
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا سلم قام النساء حين يقضى تسليمه ويمكث هو فيمقامه يسيرا قبل ان يقوم. (رواه بخاري : ৮৭০)
রাসূল () যখন নামায শেষে সালাম ফেরাতেন তখন কোনো প্রকার বিলম্ব না করে মহিলাগণ কাতার থেকে উঠে চলে যেতেন। আর রাসূল স. আপন স্থানে কিছুক্ষণ বসে থাকতেন। (যাতে মহিলাদের সাথে পুরুষের কোনো রকম সংমিশ্রণ না হয়)। তাখরিজ: বুখারী-৮৭০


এসব হাদীস থেকে প্রমাণ হয় যেরাসূল () চলাচলের পথে পুরুষ-নারীর সংমিশ্রণ না হওয়ার শর্তে মহিলাদের মসজিদে গমনের অনুমতি দিয়েছেন

 
(চ) অপ্রয়োজনে কোনো বেগানা পুরুষের সঙ্গে
কথা বলবে না। সর্বোপরি তাদের এই বের হওয়া ফিতনার কারণ হবে না। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদহাদিস : ৫৬৫আহকামুল কোরআনথানভি : ৩/৪৭১বাজলুল মাজহুদ : ৪/১৬১)


কিন্তু রাসুলুল্লাহ ()-এর বিদায়ের কিছুদিন পর থেকেই। যখন এই শর্তগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে শুরু করেতখন রাসুল ()-এর প্রাণ প্রিয় সাহাবিরা তা উপলব্ধি করতে পেরে নারীদের মসজিদে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা

জারি করেন।

 

প্রশ্ন:  গ।  বর্তমান যামানায় নারীদের জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার বিধান কি?

উত্তর:       গ।   হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) নিজ খেলাফত আমলে যখন মহিলাদের পরিবর্তিত অবস্থা দেখেন এবং ফিতনার। আশঙ্কাও দিন দিন বাড়তে থাকেতখন উম্মুল মুমিনিন
আয়েশা (রা.)ইবনে মাসউদ ও ইবনুজ জুবায়ের (রা.)সহ বড় বড় সাহাবায়ে কেরাম নারীদের মসজিদে না আসার আদেশ জারি করলেন। যেমন,


হাদিস নং-১

عن عبد الله بن سويد الأنصاري عن عمته امرأة أبي حميد الساعدي : أنها جاءت النبي صلى الله عليه و سلم فقالت : يا رسول الله صلى الله عليه و سلم إني أحب الصلاة معك فقال : قد علمت أنك تحبين الصلاة معي و صلاتك في بيتك خير من صلاتك في حجرتك و صلاتك في حجرتك خير من صلاتك في دارك و صلاتك في دارك خير من صلاتك في مسجد قومك و صلاتك في مسجد قومك خير من صلاتك في مسجدي فأمرت فبني لها مسجد في أقصى شيء من بيتها و أظلمه فكانت تصلي فيه حتى لقيت الله عز و جل

আব্দুল্লাহ বিন সুয়াইদ আল আনসারী রাঃ তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন যেআবু হুমাইদ আস সায়িদী এর স্ত্রী রাসূল () এর কাছে এসে  বললেনহে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় আমি আপনার সাথে নামায পড়তে পছন্দ করি। তখন নবীজী () বললেন-আমি জেনেছি যেতুমি আমার সাথে নামায পড়তে পছন্দ কর।  অথচ তোমার একান্ত রুমে নামায পড়া উত্তম তোমার জন্য তোমার বসবাসের গৃহে নামায পড়ার চেয়ে। আর তোমার বসবাসের গৃহে নামায পড়া উত্তম তোমার বাড়িতে নামায পড়ার চেয়ে। আর তোমার বাড়িতে নামায পড়া উত্তম তোমার এলাকার মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে। আর তোমার এলাকার মসজিদে নামায পড়া উত্তম আমার মসজিদে [মসজিদে নববীতে] নামায পড়ার চেয়ে।  তারপর তিনি আদেশ দিলেন তার গৃহের কোণে একটি রুম বানাতে। আর সেটিকে অন্ধকারচ্ছন্ন করে ফেললেন। তারপর সেখানেই তিনি নামায পড়তেন মৃত্যু পর্যন্ত। তাখরিজ: সহীহ ইবনে খুজাইমাহাদীস নং-১৬৮৯ইলাউস সুনান-৩/২৬।

 

আসার-০১

عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَتْ لَوْ أَدْرَكَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم– مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ الْمَسْجِدَ كَمَا مُنِعَهُ نِسَاءُ بَنِى إِسْرَائِيلَ. قَالَ يَحْيَى فَقُلْتُ لِعَمْرَةَ أَمُنِعَهُ نِسَاءُ بَنِى إِسْرَائِيلَ قَالَتْ نَعَمْ.

অর্থ:  আয়েশা (রা) বলেন. যদি রাসূলুল্লাহ () জানতেন যেমহিলারা কি অবস্থা সৃষ্টি করেছে তা হলে বনী ইসরাইলের মহিলাদের যেমন নিষেধ করা হয়েছিলতেমনি এদেরও মসজিদে আসা নিষেধ করে দিতেন । (রাবী) ইয়াহইয়া ইবন সায়ীদ (র) বলেনআমি আমরাহ (রা) কে জিজ্ঞেস করলামতাদের কি নিষেধ করা হয়েছিল তিনি বললেন হ্যাঁ । তাখরিজ: বুখারী-৮৩১ ই.ফা.

 

বুখারি শরিফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা বদরুদ্দিন আইনি (রহ.) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, ‘আয়েশা (রা.)-এর এই মন্তব্য তো রাসুলুল্লাহ ()-এর দুনিয়া থেকে বিদায়ের কিছুদিন পরের নারীদের সম্পর্কে। অথচ আজকের যুগের নারীদের উগ্রতা আর বেহায়াপনার হাজার ভাগের এক ভাগও সে যুগে ছিল না। তাহলে এ অবস্থা দেখে তিনি কী মন্তব্য করতেন?’ (উমদাতুল কারি : ৬/১৫৮)

 

এখন আমরা চিন্তা করে দেখতে পারি যে আল্লামা বদরুদ্দিন আইনি (রহ.) নিজ যুগ তথা হিজরি নবম শতাব্দীর নারীদের সম্পর্কে এ কথা বলেছেন। তাহলে আজ হিজরি পঞ্চদশ শতাব্দীতে সারা বিশ্ব যে অশ্লীলতা আর
উলঙ্গপনার দিকে ছুটে চলেছেবেপর্দা আর
বেহায়াপনার আজ যে ছড়াছড়িমেয়েরা যখন পুরুষের পোশাক পরছেপেট-পিঠ খুলে রাস্তাঘাটে বেড়াচ্ছেঠিক সে মুহূর্তে অবলা মা-বোনদের সওয়াবের স্বপ্ন দেখিয়ে মসজিদে আর ঈদগাহে টেনে আনার অপচেষ্টা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।

 

আসার-০২

عن أبي عمرو الشيباني أنه رأى بن مسعود يخرج النساء من المسجد ويقول أخرجن إلى بيوتكن خير لكن

অর্থ: আবু আমর শায়বানি (রহ.) বলেনআমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে দেখেছিতিনি জুমার দিন নারীদের মসজিদ থেকে বের করে দিতেন এবং বলতেনআপনারা বের হয়ে যান। আপনাদের ঘরই আপনাদের জন্য উত্তম। তাখরিজ: আল মুজামুল কাবির-৯৪৭৫

 

আসার নং-০৩

হজরত জুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা.) তাঁর পরিবারের কোনো নারীকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজে যেতে দিতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা-৫৮৪৬

নোট: হাদিসটির সনদ  সহিহ

 

আসার নং-০৪

হজরত ইবনে ওমর (রা.) তাঁর স্ত্রীদের ঈদগাহে বের হতে দিতেন না। মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা-৫৮৪৫

 নোট: হাদিসটির সনদ সহিহ

 


প্রশ্ন:     ঘ।      নারীদের মসজিদে গমন নিয়ে ফিকাহবিদদের মতামত কি?


উত্তর:    ঘ।                    প্রথমদিকের কিছু ওলামায়ে কেরাম বৃদ্ধাদের জন্য মাগরিব ও এশার সময় ফিতনামুক্ত হওয়ার কারণে মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। পরবর্তী ফিকাহবিদরা ফিতনার ব্যাপকতার কারণে যুবতী ও বৃদ্ধা সবার জন্য সব নামাজে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন। সূত্র: শরহুস সগির : ১/৪৪৬আল মাজমু : ৪/১৯৮আল মুগনি : ২/১৯৩

 

হানাফি মাজহাবের বিখ্যাত গ্রন্থ বাদায়েউস সানায়ে’ তে বলা হয়েছে যে যুবতী নারীদের মসজিদে যাওয়া ফিতনা। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/১৫৬)
.
আল্লামা ইবনে নুজাইম মিসরি ও আল্লামা হাসকাফি.(রহ.) বলেনবর্তমান যুগে ফিতনার ব্যাপক প্রচলন হওয়ায় ফতোয়া হলোসব নারীর জন্যই সব নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতে আদায় করা মাকরুহে তাহরিমি। সূত্র:
আল বাহরুর রায়েক : ১/৬২৭-৬২৮আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩৮০


প্রশ্ন:    । হাদিসে তো নারীদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিতে নিষেধ করা হয়েছে, তাহলে মাকরুহ হলো কিভাবে?

উত্তর:    ঙ।      আব্দুল্লাহ ইবনে উমরের সূত্রে রাসূল () ইরশাদ করেন 
اذا استاذنت امرأة احدكم الي المساجد فلا يمنعها . (رواه البخاري)
তোমাদের স্ত্রীগণ মসজিদে আসার অনুমতি চাইলে তাদের নিষেধ করো না। তাখরিজ: বুখারী-৫২৩৮

 

ব্যাখ্যা: আল্লামা ইবনে হাজর (রহ.) বলেনএ হাদিসে যদিও স্বামীকে নিষেধ করতে বারণ করা হয়েছেএ বারণ কঠোর নিষেধ নয়বরং তা হলো সাধারণ নিষেধ। এ জন্যই স্বামী অনুমতি দিলেও ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান ফিতনার আশঙ্কায়
নারীদের মসজিদে আসা নিষেধ করতে পারবেন।
সূত্র: মিরকাতুল মাফাতিহ : ৩/৮৩৬

 

তথ্য সহযোগিতায়: https://muhammadsaifurbd.wordpress.com/

 

والله اعلم بالصواب