জিজ্ঞাসা-১২৬১৯:
মুহতারাম,আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। অনিয়মিত সালাত আদায় কারীর সাথে শরীকানা কুরবানী করলে কুরবানী আদায় হবে কি না? দলীল সহ জানার আবেদন।
তারিখ: ১১/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আবু সুমাইয়া মোঃ শাহজাহান শেখ, কুমিল্লা থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, কুরবানি সামর্থবান মুসলমানের উপর ওয়াজিব। ভিন্ন দুটি ইবাদত। চূড়ান্ত কথা হলো, বেনামাজির সাথে কুরবানী হবে। দলিল:
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، ح. وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُهِلِّينَ بِالْحَجِّ فَأَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَشْتَرِكَ فِي الإِبِلِ وَالْبَقَرِ كُلُّ سَبْعَةٍ مِنَّا فِي بَدَنَةٍ .
ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া ও আহমদ ইবনে ইউনুস (রাহঃ) ......... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে রওয়ানা হলাম। তিনি আমাদেরকে প্রতিটি উট বা গরু সাতজনে মিলে কুরবানী করার নির্দেশ দিলেন। তাখরিজ: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩০৫৬ (আন্তর্জাতিক নং ১৩১৮-২)
নোট: এ হাদিসে কোন শর্ত করেনি, আমাদের সাত জন মানে মুসলমান সাতজন। আর বেনামাজি নিঃসন্দেহে মুসলমান আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।
তবে সংশয় থেকেই যায়, যিনি নিয়মিত নামাজ পড়েন না নিঃসন্দেহে তিনি ফাসেক। ফাসিক ব্যক্তি মুত্তাকী নয়। আর আল্লাহ তাআলা বলেছেন একমাত্র মুত্তাকীদের এবাদত/কুরবানী কবুল করেন। দলিল:
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ
আপনি তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শুনান। যখন তারা ভয়েই কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের একজনের উৎসর্গ গৃহীত হয়েছিল এবং অপরজনের গৃহীত হয়নি। সে বললঃ আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। সে বললঃ আল্লাহ ধর্মভীরুদের পক্ষ থেকেই তো গ্রহণ করেন। সূরা মায়েদা-২৭
সুতরাং বেনামাজি, পাপিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কোরবানি দিলে কবুল না হওয়ার সম্ভাবনা আছে। (কবুল হবে না অর্থাৎ সওয়াব পাবে না কিন্তু ফরজ/ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে)
সারকথা হলো, মোত্তাকি-পরহেজগার ব্যক্তির সাথে কোরবানি শরিক হওয়া উচিত, একান্তর না পেলে তাদের নিয়ত সঠিক থাকলে এবং টাকা হালাল হলে কোরবানি হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক