আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৬২০: জামায়াতে নামাজের ক্ষেত্রে মুক্তাদির কাতার থেকে ইমাম কতুটুকু দূরত্বে দাড়াবেন?

No Comments

  



জিজ্ঞাসা-১২৬২০:

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার জানার বিষয়  হলো জামায়াতে নামাজের ক্ষেত্রে মুক্তাদির কাতার থেকে ইমাম কতুটুকু দূরত্বে দাড়াবেন?

তারিখ:  ১২/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       


মাওলানা আশরাফুল ইসলাম বরিশাল থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলোআমাদের দেশে বা মুসলিম বিশ্বে মসজিদসমূহ যেভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ইমাম এবং মুসল্লি যেভাবে দাঁড়ায় এটাই সুন্নাহ। দলিল:


হাদিস নং -০১

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، وَصَالِحُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ وَرْدَانَ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنِي خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي مَعْشَرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لِيَلِنِي مِنْكُمْ أُولُو الأَحْلاَمِ وَالنُّهَى ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ - ثَلاَثًا - وَإِيَّاكُمْ وَهَيْشَاتِ الأَسْوَاقِ " .

 আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা অধিকজ্ঞানী ও বুদ্ধিমান তারা আমার নিকট দাঁড়াবে। অতঃপর যারা তাদের কাছাকাছি তারা, অতঃপর যারা তাদের কাছাকাছি তারা, অতঃপর যারা তাদের কাছাকাছি তারা দাঁড়াবে। আর তোমরা বাজারী হট্টগোল হতে দূরে থাকবে। তাখরিজ: মুসলিম -৪৩২


হাদীসের ব্যাখ্যা: এই হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার কাছাকাছি দাঁড়াতে বলেছেন। কাছাকাছি এর ব্যাখ্যা হলো তার পেছনে এক কাতার পর অর্থাৎ আমরা যেভাবে দাঁড়ায়। 


তবে একাতারের একটু বেশি হলে অসুবিধা নেই,  বিশেষ কারণে আরও বেশি হলে অসুবিধা নেই, সর্বোচ্চ 

দুই কাতারের সমান বা ছয় হাত দূরে দাঁড়ানো জায়েজ আছে। সূত্র:  সূত্র: আলফিকহু আলাল মাজহিবিল আরবা-০০২


দুই কাতারের মাঝে কতটুকু দূরত্ব জায়েজ এ বিষয়ে আলবুরহানে জিজ্ঞাসা -১২৫০৫ শিরোনামে 'ঘ' নং কলামে মাসয়ালাটি আলোচিত হয়েছে।


হাদিস নং -০২

ثُمَّ جِئْتُ حَتَّى قُمْتُ عَنْ يَسَارِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَأَخَذَ بِيَدِي فَأَدَارَنِي حَتَّى أَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَجَاءَ ابْنُ صَخْرٍ حَتَّى قَامَ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَنَا بِيَدَيْهِ جَمِيعًا حَتَّى أَقَامَنَا خَلْفَهُ قَالَ وَجَعَلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَرْمُقُنِي وَأَنَا لَا أَشْعُرُ ثُمَّ فَطِنْتُ بِهِ فَأَشَارَ إِلَىَّ أَنْ أَتَّزِرَ بِهَا 

জাবের (রাঃ) বলেন, একদা মহানবী (ﷺ) মাগরেবের নামায পড়ার জন্য দাঁড়ালেন। এই সময় আমি এসে তাঁর বাম দিকে দাঁড়ালাম। তিনি আমার হাত ধরে ঘুরিয়ে তাঁর ডান দিকে দাঁড় করালেন। ইতিমধ্যে জাব্বার বিন সাখার (রাঃ) এলেন। তিনি তাঁর বাম দিকে দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি আমাদের উভয়ের হাত ধরে ধাক্কা দিয়ে তাঁর পশ্চাতে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তাখরিজ: মুসলিম-৩০১০; আবূ দাঊদ-৬৩৪; মিশকাত- ১১০৭


হাদিসের ব্যাখ্যা: আল্লাহ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাব্বার রা.কে  পিছনে কাতারের দাঁড় করিয়ে দিলেন। কাতারগুলো কাছাকাছি দাঁড়ানোর আদেশ রয়েছে। ৩ নং হাদিসে উল্লেখ করা হলো। 


হাদিস নং -০৩

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُصُّوا صُفُوفَكُمْ وَقَارِبُوا بَيْنَهَا وَحَاذُوا بِالْأَعْنَاقِ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لَأَرَى الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ مِنْ خَلَلِ الصَّفِّ كَأَنَّهَا الْحَذَفُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ (সালাতে) তোমাদের কাতারগুলো মিলেমিশে দাঁড়াবে এবং কাতারগুলোও কাছাকাছি দাঁড়াবে । সহীহ : আবূ দাঊদ ৬৬৭, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৫৪৫, ইবনু হিব্বান ৬৩৩৯, সহীহ আত্ তারগীব ৪৯৪, সহীহ আল জামি‘ ৩৫০৫




ব্যাখ্যা: এ হাদিস থেকে ফুকাহায়ে উম্মত দলিল দলিল গ্রহণ করেছেন, দুই কাতারের মাঝখানে কতটুকু দূরত্ব বজায় রাখা জায়েয, এ বিষয়ে পূর্বের হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।


সারকথা হলো, উল্লেখ্য যে, হাদিসে যেমন মুতাওয়াতির রয়েছে আমলেও তদ্রূপ মুতাওয়াতির রয়েছে। যাকে আমলে মুতাওয়াতির  বলে।  আমাদের সমাজে মসজিদে যেভাবে ইমাম মুসল্লিদের কাতারে দাঁড়ানোর যে পদ্ধতি আছে, এটা আমলের মুতাওয়াতির দ্বারা প্রমাণিত এবং এটাই সুন্নাহর অধিকতর নিকটবর্তী।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক