জিজ্ঞাসা-১২৬৩৯:
السلام عليكم و رحمة الله وبركاته.
মুহতারাম, এক ঘরে দুই ভাই
(একই সংসার) বাবা নেই মা বেঁচে আছেন। দুইজন মিলে এক জনের পক্ষ থেকে কুরবানি করলে আদায় হবে? (এক বছর একজনের পক্ষ থেকে আরেক বছর অন্য জনের পক্ষ থেকে)। মৌলিক উত্তর জানানোর অনুরোধ করছি।
তারিখ: ২১/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন
ইন্টারপ্রেটার, ইউনিসফা মিশন, সুদান।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, দুই জনের টাকা দিয়ে এক ভাগ/ অংশ হয় না। দলিল:
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُهِلِّينَ بِالْحَجِّ: «فَأَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَشْتَرِكَ فِي الْإِبِلِ وَالْبَقَرِ، كُلُّ سَبْعَةٍ مِنَّا فِي بَدَنَةٍ
জাবির রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনম, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হজ্জের ইহরাম বেঁধে রওনা হলাম। অতঃপর তিনি উট ও গরুতে আমাদের মধ্যে সাতজন করে শরীক হবার (ও কুরবানী করার) নির্দেশ দিলেন। তাখরিজ: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৩১৮, ৩০৪৯
এই হাদিস শরিফ থেকে ফোকাহায়ে কেরাম মাসআলা ইস্তেবাত করেছেন যে, প্রত্যেক শরিককে সমান সমান অংশ হতে হবে। এক অংশে বা একভাগে দুই মালিকানা জায়েজ নেই। দলিল:
ولو لأحدهم أقل من سبع لا يجز عن أحد (الدر المختار مع رد المحتار-9/457)
অর্থাৎ তাদের মধ্যে একটি সাতের কম হলেও কারো জন্য জায়েয নয় (আল-দুর আল-মুখতার রাদ্দ আল-মুহতার সহ - 9/457)
واذا كان الشركاء فى البدنة أو البقرة ثمانية لا يجزئهم، لأن نصيب أحدهم أقل من السبع (الفتاوى التاتارخانية، كتاب الأضحية، الفصل الثامن فيما يتعلق بالشركة فى الضحايحا-17/453، رقم-2780)
আর যদি একটি উট বা একটি গরুর অংশীদার আটজন হয় তবে তা তাদের জন্য যথেষ্ট নয়, কারণ তাদের একজনের অংশ এক-সপ্তমাংশের কম। সূত্র: (তাতারখানি ফতোয়া, কিতাবুল উদহিয়া আদ-দুহায়হা-17-এ অংশীদারিত্ব সম্পর্কিত অধ্যায় অষ্টম। /453, নং 2780)
তবে একটা ছুরত আছে, একজন আরেকজনকে টাকা ধার দিবে অথবা হাদিয়া দিবে টাকার মালিক বানিয়ে দিবে।
তারপর একজনের নামে কুরবানী দিলে সহিহ হবে।
বিষয়টি এ রকম একজন লোক হজে যাবে কিন্তু কিছু টাকা ঘাটতি আছে। সে যদি এখন টাকা ধার নেয় অথবা তার টাকা ঘাটতি জেনে একজন তাকে নিঃস্বার্থ টাকা হাদিয়া/গিফট করলো, তাহলে উভয় অবস্থাতেই তার হজ সহিহ হবে। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ: সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। সূরা মায়েদা-০২
প্রশ্ন: ক। নিঃস্বার্থ দানের/ হাদিয়ার আলামত কি?
উত্তর: ক। কুরবানির পর দুই ভাই গোস্ত সমান সমান ভাগ করলে কুরবানি হবে না, যিনি (তার নামে কুরবানি করা হবে) কুরবানি করবেন তার ইচ্ছাধীন থাকবে।
যদি গোস্ত ভাগ করে বা দাবি করে, বুঝতে হবে টাকার মালিক বানিয়ে দেয় নাই। তাই কুরবানিও হবে না।
আর পরের বছর আরেকজনের নামে দিলে উপরোক্ত শর্তবলি প্রযোজ্য হবে।
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে, আপন ভাইকে নিঃস্বার্থভাবে টাকার মালিক বানিয়ে দিলে এবং একজনের নামে কুরবানি করা হলে, কুরবানি সহিহ হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক