আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৬৪৫: পিতার আদেশে তালাক দিলে, তালাক হবে কি?

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১২৬৪৫:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। 

মুহতারাম, আসসালামু আলাইকুম।

আমার দুইটা প্রশ্ন। 

১। বাবার চাপে ছেলে যদি তার স্ত্রীকে তালাক দেয় তাহলে সেই স্ত্রী তালক হবে কিনা?

২। জেনে বা না জেনে কেউ তার দুধ বোনকে বিয়ে করলে তার বিধান কি?

তারিখ:  ২২/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা  মোঃ মাহবুবুর রহমান, নড়াইল  থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে মাসয়ালাটিকে দুই ভাগে ভাগ করছি।


প্রশ্ন: ১। বাবার চাপে ছেলে যদি তার স্ত্রীকে তালাক দেয় তাহলে সেই  স্ত্রী তালক হবে কিনা?


উত্তর: ১। হ্যাঁ, তালাক হয়ে যাবে। কারণ তালাক এমন জিনিস রাগে, হেসে, এমনকি ঠাট্টা করে দিলেও তালাক পতিত হবে। দলিল:


حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، - يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ - عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَبِيبٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنِ ابْنِ مَاهَكَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . 

আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা মনেপ্রাণে করা হোক অথবা ঠাট্টাচ্ছলে করা হোক, তা কার্যকর হবে। তাহলো বিবাহ, তালাক ও তালাক প্রত্যাহার।তাখরিজ: আবু দাউদ -২১৯৪; তিরমিজি-১১৮৪

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)



প্রশ্ন: ২। জেনে বা না জেনে কেউ তার দুধ বোনকে বিয়ে করলে তার বিধান কি?


উত্তর: ২। জেনে বা না বোনকে বিবাহ করা হারাম। যদি  না জেনে বিবাহ করে পরে যদি জানতে পারে, তাহলে সাথে সাথেই বিচ্ছিন্ন হওয়া ফরজ। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার একত্রে থাকলে ব্যভিচার এবং কঠিন কবীরা গুনাহ হবে। 


নিজ আপন বোনের মত দুধ বোনকে বিবাহ করা হারাম। দুধ পান করার কারণে নিজ মায়ের মত হুরমত ও বংশীয় সম্পর্ক কায়েম হয়। দলিল:

আয়াত নং -০১

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ وَبَنَاتُكُمْ وَأَخَوَاتُكُمْ وَعَمَّاتُكُمْ وَخَالَاتُكُمْ وَبَنَاتُ الْأَخِ وَبَنَاتُ الْأُخْتِ وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُم مِّنَ الرَّضَاعَةِ وَأُمَّهَاتُ نِسَائِكُمْ 

অর্থ: তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন। সূরা নিসা-২৩


হাদিস নং-০১

٢٦٤٥ -حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بِنْتِ حَمْزَةَ: «لاَ تَحِلُّ لِي، يَحْرُمُ مِنَ الرَّضَاعِ مَا يَحْرُمُ مِنَ النَّسَبِ، هِيَ بِنْتُ أَخِي مِنَ الرَّضَاعَةِ –

ইবনে আব্বাস (রা.) হযরত হামজা (রা.) এর কন্যাকে বিবাহের বিষয়ে রাসূল (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তাকে বিবাহ করা তোমার জন্য বৈধ না। কেননা দুধ পান করার দ্বারা যেমন বিবাহ হারাম হয়, তেমনি বংশের কারণেও হারাম হয়, আর হামজা (রা.) এর কন্যা তোমার দুধবোন। তাখরিজ: বুখারি-২৬৪৫


 ইজমায়ে উম্মাহ: ‘ ইসলাম দুধ সম্পর্ককে বংশীয় সম্পর্কের ন্যায় মনে করে। ইজমায়ে উম্মত হচ্ছে, বংশীয় কারণে যারা হারাম, দুধ সম্পর্কের কারণেও তারা হারাম। সূত্র: মূফতী তকী উসমানী হাফিজাহুল্লাহ, ফিকহুল বূয়ু খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩১৫; শহীদুল ইসলাম অনূদিত


সারকথা হলো, আপনি উল্লেখ করেননি কয় তালাক দিয়েছে, যদি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে, তাহলে তো সুযোগ আছে আর তিন তালাক দিলে হিলা ছাড়া গন্তব্য নেই।


দুধ বোন প্রমাণিত হওয়ার পর পৃথক হওয়া ফরজ, আল্লাহ তাআলাকে ভয় করা উচিত।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক