আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৬৪৮: ওয়াজিব কুরবানি নিজের নাম বাদ দিয়ে অন্য কারো নামে কুরবানি সহিহ হবে কি?

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১২৬১০:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারম,আছছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,অনেক প্রশ্ন মনে জমেথাকা সত্তেও,অধিক প্রশ্ন পাঠাতে ভয়হয়।কারণ আপনাকে সীমাহীন কষ্ট দিয়ে জালেমদের কাতারে শামিলহয়ে যাইনাকি।লেখার কষ্ট সম্পর্কে আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। প্রশ্নহলো, ছাহেবে কুরবানী (যার ওপর কুরবানী করা ওয়াজিব),নিজনামের পরিবর্তে মা,বাবা,স্ত্রীর নাম দিলে( মনোখুশি এবং ছাওয়াবে অংশিদার করার জন্য)দলিলানুসারে কোনো সমস্যা আছে কি? 


তারিখ:  ২৫/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা এস এম মাহবুবুর রহমান, পিরোজপুর,  থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, স্বাভাবিক অবস্থায় পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনের জন্য কোরবানি করা নফল আর সাহেবে নিসাব ব্যক্তির উপর কোরবানির ওয়াজিব।


তাই যদি একটি মাত্র ভাগ/ শরিক  হয়,  তাহলে নফলের উপর ওয়াজিব প্রাধান্য পাবে।


সুতরাং এক্ষেত্রে নিজের নাম বাদ দিয়ে অন্য কারো নাম দিলে নিজের ওয়াজিব আদায় হবে না। কেননা হাদিস শরীফে সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কোরবানি করার কথা বলা হয়েছে। দলিল:


لِمَا رَوَى أَبُو هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ( مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ، وَلَمْ يُضَحِّ، فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا )

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরবানী করার সামর্থ্য পায় এবং তা না করে, সে যেন আমাদের নামাযের নিকটবর্তী না হয়।

তাখরিজ: মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, সদস্য : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াতারহীব ২/১৫৫


যদি একাধিক ভাগ কোরবানি দেয়, তাহলে নিজের নাম একটি আর অন্য ভাগে যেকোনো ব্যক্তি নাম দিতে পারবে। তাহলে উভয়ের কোরবানি সহিহ এবং আদায় হবে।

ফরজ-ওয়াজিব ইবাদতে দুই নামে বা কাউকে শরিক করা যায় না। কিন্তু নফল ইবাদতে বা কোরবানিতে একাধিক ব্যক্তিকে শরিক করা যায়। দলিল:

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي الإِسْكَنْدَرَانِيَّ - عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الْمُطَّلِبِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَضْحَى بِالْمُصَلَّى فَلَمَّا قَضَى خُطْبَتَهُ نَزَلَ مِنْ مِنْبَرِهِ وَأُتِيَ بِكَبْشٍ فَذَبَحَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ وَقَالَ " بِسْمِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ هَذَا عَنِّي وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِي " .

কুতায়বা ইবনে সা‘ঈদ (রাহঃ) ..... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ঈদুল আযহার দিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সঙ্গে ঈদগাহে উপস্থিত হই। তিনি খুতবা শেষ করার পর যখন মিম্বর হতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর নিকট একটি বকরী আনা হয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিজ হাতে সেটি যবেহ করেন এবং এ সময় বলেনঃ বিসমিল্লাহ-হি আল্লাহু আকবার। এটি আমার তরফ হতে এবং আমার উম্মতের ঐ ব্যক্তিদের পক্ষ হতে, যারা কুরবানী করেনি।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৮০১ (আন্তর্জাতিক নং ২৮১০)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)


সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে, ওয়াজিব কুরবানি দাতা  নিজের নামে কুরবানি দিতে হবে। অন্য কাউকে শরীক করতে চায়লে আরেকটি ভাগে দিতে হবে।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক