মোটিভেশন ক্লাস-০২:
সাহায্যকারী মনোভাব ও ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের প্রয়োজনীয়তা
ভূমিকা: হামদ ও সানার পর কথা হলো, পৃথিবীর সব ধর্মই মানবতা-পরোপকারীরর কথা বলে, তবে ইসলাম পৃথিবীর একমাত্র মানবতার কল্যাণকামী শ্রেষ্ঠ ধর্ম। পৃথিবীতে ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে মানবতার কল্যাণ সাধন করাকে এতোটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে; অন্য কোন ধর্মে বলা হয়নি। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন,
کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَتَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَتُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ ؕ وَلَوۡ اٰمَنَ اَہۡلُ الۡکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ مِنۡہُمُ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَاَکۡثَرُہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ
তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত মানবজাতির কল্যাণের জন্যে তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। সুরা আল ইমরান ১১০
ক। সাহায্যকারী মনোভাব সম্পর্কে ইসলাম: প্রিয় উপস্থিতি!
(০১) পুরো দ্বীনটা কল্যাণকামিতার প্রতিষ্ঠিত: যেমন, হাদিস শরীফে এসেছে,
عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ:” الدِّينُ النَّصِيحَةُ , فَقُلْنَا: لِمَنْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: لِلهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ “ অর্থ: হজরত আবু রুকাইয়া তামিম ইবনে আওস আদ-দারি (রা.) হতে বর্ণিত। নবি (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, দীন ইসলামের মুল কথা হচ্ছে কল্যাণকামিতা। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, কার জন্য? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রসূল, মুসলমানদের ইমাম ও সমস্ত মুসলমানদের জন্য। তাখরিজ : মুসলিম-৫৫; আবু দাউদ-৪৯৪৪; দারেমি-৪১৯৭; মুসনাদে আহমদ-১৬৯৪০
عَنْ جَرِيرٍ قَالَ: «بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى إِقَامِ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ» অর্থ: জাবের (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট বায়আত গ্রহণ করেছি সালাত কায়েম করা, জাকাত প্রদান করা এবং সমস্ত মুসলিমের মঙ্গল কামনা করার ওপর। তাখরিজ : বুখারি-৫৭; মুলিম-৫৬; তিরমিজি-১৯২৫; নাসায়ি-৪১৫৬; আহমদ-১৯১৯১
(০২) সাহায্যকারী মনোভাবের ফজিলত: একবার হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) মসজিদে নববিতে ইতেকাফ করছিলেন। এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি মসজিদে নববিতে এসে তাকে সালাম করে পাশে চুপচাপ বসে পড়লেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কী ব্যাপার তোমাকে চিন্তিত ও পেরেশান দেখা যাচ্ছে। লোকটি জবাব দিলো, হে রসূল (ﷺ)-এর চাচাতো ভাই! নিশ্চিয় আমি খুবই চিন্তিত ও পেরেশান। কেননা, অমুক ব্যক্তি আমার কাছে ঋণ পাবে। অতঃপর সে রওজায়ে পাকের দিকে ইশারা করে বলেন, এই রওজায় যিনি শুয়ে আছেন তার ইজ্জতের কসম, আমি এই ঋণ কখনো পরিশোধ করতে সক্ষম হবো না।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) তা শুনে বলেন, তাহলে আমি তোমার জন্য পাওনাদারের নিকট সুপারিশ করবো? লোকটি বললো আপনি যা ভালো মনে করেন তাই করেন। এই কথা শুনে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) তখনই জুতো পরে মসজিদের বাইরে এলেন। লোকটি বলেন, আপনি কী ইতেকাফের কথা ভুলে গেছেন? হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, না ভুলি নাই। তবে খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, আমি এই কবরবাসী রসূল (ﷺ) এর কাছ থেকে শুনেছি। এ কথা বলে তিনি কাঁদতে লাগলেন। সাহাবায়ে কেরাম, রসূল (ﷺ)-কে কেমন ভালোবাসতেন তা এখান থেকে কিছুটা আন্দাজ করা যায়। তারপর তিনি বলেন, রসূল (ﷺ) বলেছেন,
مَنْ مشى في حاجةِ أخيه؛ كان خيراً له مِنِ اعْتكافِ عَشرِ سنينَ، ومَنِ اعْتَكَف يوماً ابْتِغَاءَ وجْهِ الله؛ جعَلَ الله بينَه وبينَ النارِ ثلاثَ خنادِقَ، كلُّ خَنْدَقٍ أبعَدُ مِمّا بين الخافِقَيْنِ”. رواه الطبراني في الأوسط والبيهقي واللفظ له والحاكم مختصرا وقال صحيح الإسناد অর্থাৎ- যে ব্যক্তি নিজের ভাইয়ের কোনো কাজ করা বা প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করবে, তা তার জন্য দশ বছর ইতেকাফ করার চেয়ে বেশি সওয়াব লাভের কারণ হবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য এক দিন ইতেকাফ করে, আল্লাহ পাক তার ও জাহান্নামের মাঝে তিন খন্দক পরিমাণ দূরত্ব সৃষ্টি করে দেন। যার দূরত্ব আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী দূরত্বের চেয়ে আরো অনেক বেশি। তাখরিজ : তবারানি-৭৩২২;মাজমাউল যাওয়ায়েদ-৪/১৯২; মুসতাদরাকে হাকেম, সুনানে বায়হাকি
(০৩) আল্লাহ বান্দাকে ততক্ষণ সাহায্য করবে; যতক্ষণ সে তার ভাইকে সাহায্য করে: যেমন হাদিস শরীফে এসেছে-وَاَللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ অর্থ: বান্দা যতক্ষণ তার অপর মুসলিম ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে, আল্লাহও ততক্ষণ তার সাহায্য-সহায়তা করতে থাকেন।’ -মুসলিম শরীফ : ২৪৫ (সংক্ষেপিত)
(০৪) গোলাম তার মালিকের জন্য কল্যাণের দোআ করলে লাভ কী:
عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ :« إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا نَصَحَ لِسَيِّدِهِ وَأَحْسَنَ عِبَادَةَ اللَّهِ فَلَهُ أَجْرُهُ مَرَّتَيْنِ » অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, গোলাম যখন স্বীয় মনিবের কুশল বা কল্যাণ কামনা করে এবং খোদার ইবাদতও সঠিকভাবে করতে থাকে, তখন সে দ্বিগুণ সওয়াব পায়।[1] তাখরিজ : বুখারি-২৫৫০; মুসলিম-১৬৬৪; আবু দাউদ-৫১৬৯
(০৫) অপরের জন্য কল্যাণ কামনার লাভ:
وَعَن أَبي الدَّردَاءِ أَنَّ رسُول اللَّه ﷺ كانَ يقُولُ: دَعْوةُ المرءِ المُسْلِمِ لأَخيهِ بِظَهْرِ الغَيْبِ مُسْتَجَابةٌ، عِنْد رأْسِهِ ملَكٌ مُوكَّلٌ كلَّمَا دَعَا لأَخِيهِ بخيرٍ قَال المَلَكُ المُوكَّلُ بِهِ: آمِينَ، ولَكَ بمِثْلٍ رواه مسلم. অর্থ: আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূল (ﷺ) বলেছেন : কোন মুসলিম তার অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দোআ করলে তা কবুল করা হয় এবং তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকে। যখনই সে ব্যক্তি তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোআ করে তখন সে নিযুক্ত ফেরেশতা বলে, আমিন অর্থাৎ হে আল্লাহ! কবুল করুন এবং তোমার জন্য অনুরূপ। (তোমার ভাইয়ের জন্য যা চাইলে আল্লাহ তোমাকেও তাই দান করুন)।[2] তাখরিজ : মুসলিম-২৭৩৩; সুনানুল কুবরা লিল-বায়হাকি-৬৪৩১; মিশকাত-২২২৮
(০৬) অনুগ্রহ প্রাপ্ত ব্যক্তি অন্য কে/অপরকে অনুরূপ অনুগ্রহ করার নির্দেশ:
আল্লাহ তাআলা বলেন, وَاَحۡسِنۡ کَمَاۤ اَحۡسَنَ اللّٰہُ اِلَیۡکَ অর্থ: আল্লাহ যেমন তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, তেমনি তুমিও (অন্যদের প্রতি) অনুগ্রহ কর। সূরা কসাসা-৭৭
অর্থাৎ ইশারা করা হয়েছে যে, দুনিয়ায় তুমি যে অর্থ-সম্পদ লাভ করেছ, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলাই তার মালিক। তিনি অনুগ্রহ করে তোমাকে তা দান করেছেন। তিনি যখন এভাবে তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, তখন তুমিও মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর এবং তাঁর প্রদত্ত অর্থ-সম্পদে তাদেরকে শরীক কর। তাফসীরে তাওজিহুল কুরআন-মুফতি তাকি উসমানী দা.বা.
হাদিস শরিফে এসেছে-
لا يَرْحَمُ اللَّهُ مَن لا يَرْحَمُ النَّاسَ.
الراوي : جرير بن عبدالله | المحدث : البخاري | المصدر : صحيح البخاري
الصفحة أو الرقم : 7376 | أحاديث مشابهة | خلاصة حكم المحدث : [صحيح]
রাসূল (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি রহম করে না তাকে রহম করা হবে না। বুখারি-৭৩৭৬, কিতাবুল আদব
খ। ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের প্রয়োজনীয়তা
পৃথিবীর সকল নবি-রাসূল ও মনীষীগণ ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।
(০১) স্বয়ং আল্লাহ তাআলা ইতিবাচক: কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হচ্ছে-
یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَلَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ অর্থ: আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না সূরা বাকারা-১৮৫
(০২) মানুষের জন্য সহজ করা, কঠিন না করার নির্দেশ: যেমন, عن أنس بن مالك -رضي الله عنه- مرفوعاً: «يَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا، وَبَشِّرُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا». আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, “তোমরা (দীনের ব্যাপারে) সহজ পন্থা অবলম্বন কর, কঠিন পন্থা অবলম্বন কর না, মানুষকে সুসংবাদ দাও, তাদেরকে দূরে ঠেলে দিও না।” বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমদ-১৬১৮
ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের জন্য হালকা ও সহজ করা পছন্দ করতেন। তাঁকে দু’টি জিনিসের মধ্যে কোনো একটি পছন্দ করতে বললে তিনি হারাম পর্যায়ের না হলে অধিকতর সহজটিই নির্বাচন করতেন। তাঁর বাণী “তোমরা সহজ করো, কঠিন করো না।” অর্থাৎ সব ব্যাপারে তোমরা সহজকে অবলম্বন করো এবং তাঁর বাণী, “মানুষকে সুসংবাদ দাও, তাদেরকে দূরে ঠেলে দিও না।” সুসংবাদ হচ্ছে, কল্যাণের সংবাদ দেওয়া, দূরে সরিয়ে দেওয়া এর বিপরীত। দূরে ঠেলে দেওয়ার অন্যতম হচ্ছে অকল্যাণ ও অনিষ্টকর সংবাদ দেওয়া।
(০৩) নরম-কমল অন্তরের অধিকারী হওয়া: فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ لِنۡتَ لَہُمۡ ۚ وَلَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ۪ فَاعۡفُ عَنۡہُمۡ وَاسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ وَشَاوِرۡہُمۡ فِی الۡاَمۡرِ ۚ فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ
অর্থ: আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন। সূরা ইমরান-১৫৯
(০৪) মানুষকে হতাশ না করা : কোন অবস্থায় লোকদেরকে হতাশ করা যাবে না। আশার বানী শুনাতে হবে । হতাশ-নিরাশ হওয়া কুফরি। যেমন,
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
অর্থ: বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সূরা যুমার-৫৩
(০৫) মানুষের ভাল গুণাবালীর প্রশংসা করা এবং মূল্যয়ন করা: দোষে-গুণে মিলেই মানুষ। সুতরাং ভাল চরিত্রের প্রশংসা করলে, লোকটি আরও ভাল কাজে উৎসাহ পাবে। আল্লাহ তাআলা নিজে গুণগ্রাহী। যেমন, ইরশাদ হচ্ছে-
وَمَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ شَاکِرٌ عَلِیۡمٌ কোনও ব্যক্তি স্বত:স্ফূর্তভাবে কোনও কল্যাণকর কাজ করলে আল্লাহ অবশ্যই গুণগ্রাহী (এবং) সর্বজ্ঞ। সূরা বাকারা-১৫৮
অর্থাৎ বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকীর কাজ করে, তবে আল্লাহ তা’আলার অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তার সে আমলের সঠিক মুল্য দেবেন।
(০৬) দোষ মেনে নেওয়া: عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «اسْتَوْصُوا بالنِّساءِ خَيْرًا؛ فَإِنَّ المرأة خُلِقَتْ مِن ضِلعٍ، وَإنَّ أعْوَجَ مَا في الضِّلَعِ أعْلاهُ، فَإنْ ذَهَبتَ تُقيمُهُ كَسَرْتَهُ، وإن تركته، لم يزل أعوج، فاستوصوا بالنساء». وفي رواية: «المرأة كالضِّلَعِ إنْ أقَمْتَهَا كَسَرْتَهَا، وَإن اسْتَمتَعْتَ بها، استمتعت وفيها عوَجٌ». وفي رواية: «إنَّ المَرأةَ خُلِقَت مِنْ ضِلَع، لَنْ تَسْتَقِيمَ لَكَ عَلَى طَريقة، فإن استمتعت بها استمتعت بها وفيها عوج، وإنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَها، وَكَسْرُهَا طَلاَقُهَا».
[صحيح] - [الرواية الأولى: متفق عليها الرواية الثانية: متفق عليها الرواية الثالثة: رواها مسلم]
المزيــد ...
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা স্ত্রীদের জন্য মঙ্গলকামী হও। কারণ নারীকে পাঁজরের (বাঁকা) হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়ের সবচেয়ে বেশী বাঁকা হল তার উপরের অংশ। যদি তুমি এটাকে সোজা করতে চাও, তাহলে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলে তো বাঁকাই থাকবে। তাই তোমরা নারীদের জন্য মঙ্গলকামী হও।” অন্য এক বর্ণনায় আছে, “মহিলা পাঁজরের হাড়ের মত। যদি তুমি তাকে সোজা করতে চাও, তবে তুমি তা ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তুমি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও, তাহলে তার এ বাঁকা অবস্থাতেই হতে হবে।” অপর এক বর্ণনায় আছে, “মহিলাকে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সে কখনই একভাবে তোমার জন্য সোজা থাকবে না। এতএব তুমি যদি তার থেকে উপকৃত হতে চাও, তাহলে তার এ বাঁকা অবস্থাতেই হতে হবে। আর যদি তুমি তা সোজা করতে চাও, তাহলে তা ভেঙ্গে ফেলবে। আর তাকে ভেঙ্গে ফেলা হল তালাক দেওয়া। তাখরিজ: বুখারি,মুসলিম; রিয়াজুস সালেহীন-২৭৩
সারকথা হলো, নরমে যা হয়, গরমে তা হয়না। সুতরাং সবসময় ইতিবাচক ভাবতে হবে, নেতিবাচক নয়।
লেখক, মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক