জিজ্ঞাসা-১২৬৬০:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
কুরবানীর শরিকদের নাম জবাইয়ের পরে না আগে পড়া উচিত ❓
তারিখ: ০২/০৭/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
জনৈক মাওলানা সাভার থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, পরে, অর্থাৎ জবাই করার পরে যার পক্ষ থেকে কুরবানি নাম বলা, দুআ করা। যেমন- হে আমার/ অমুকের পক্ষ থেকে কুরবানী কবুল করুন। দলিল:
হাদিস নং -০১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي الإِسْكَنْدَرَانِيَّ - عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الْمُطَّلِبِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَضْحَى بِالْمُصَلَّى فَلَمَّا قَضَى خُطْبَتَهُ نَزَلَ مِنْ مِنْبَرِهِ وَأُتِيَ بِكَبْشٍ فَذَبَحَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ وَقَالَ " بِسْمِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ هَذَا عَنِّي وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِي " .
কুতায়বা ইবনে সা‘ঈদ (রাহঃ) ..... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ঈদুল আযহার দিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সঙ্গে ঈদগাহে উপস্থিত হই। তিনি খুতবা শেষ করার পর যখন মিম্বর হতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর নিকট একটি বকরী আনা হয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিজ হাতে সেটি যবেহ করেন এবং এ সময় বলেনঃ বিসমিল্লাহ-হি আল্লাহু আকবার। এটি আমার তরফ হতে এবং আমার উম্মতের ঐ ব্যক্তিদের পক্ষ হতে, যারা কুরবানী করেনি।
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৮০১ (আন্তর্জাতিক নং ২৮১০)
হাদিস নং -০২
6235 - وَحَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْجِيزِيُّ قَالَ: ثنا أَبُو زُرْعَةَ , قَالَا: ثنا حَيْوَةُ , عَنْ أَبِي صَخْرٍ الْمَدَنِيِّ , عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قُسَيْطٍ , عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ , عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِكَبْشٍ أَقْرَنَ يَطَأُ فِي سَوَادٍ , وَيَنْظُرُ فِي سَوَادٍ , وَيَبْرُكُ فِي سَوَادٍ , فَأُتِيَ بِهِ لِيُضَحِّيَ بِهِ. [ص:177] ثُمَّ قَالَ: «يَا عَائِشَةُ , هَلُمِّي الْمُدْيَةَ» ، ثُمَّ قَالَ: «اشْحَذِيهَا بِحَجَرٍ» فَفَعَلَتْ , ثُمَّ أَخَذَهَا وَأَخَذَ الْكَبْشَ فَأَضْجَعَهُ , ثُمَّ ذَبَحَهُ وَقَالَ: «بِسْمِ اللهِ , اللهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ , وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ ثُمَّ ضَحَّى بِهِ»
আহমদ ইব্ন আব্দুর রহমান ও রাবী আল-জীযী নিজ নিজ সনদে বর্ণনা করেন.... উরওয়া ইব্ন যুবায়র আয়েশা (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এমন একটা দুম্বা আনার নির্দেশ দিলেন, যেটা তা কালােতে (তার পা কালাে ছিল), দেখতাে কালােতে (চক্ষু কালাে ছিল) এবং বসতও কালােতে (অর্থাৎ তার শরীরও কালাে ছিল)। অতঃপর তা কুরবানী করার জন্য নিয়ে আসা হলাে। তারপর তিনি বললেন, আয়েশা ছুরি আন এবং পাথর দ্বারা ধারালাে কর। (হযরত আয়েশা বলেন, আমি নির্দেশ পালন করলাম। অতঃপর তিনি ছুরি নিলেন এবং দুম্বাটি ধরলেন, সেটি শুইয়ে দিলেন তারপর যবেহ করার জন্য প্রস্তুত হলেন, অতঃপর বললেন بِسْمِ اللهِ , اللهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ , وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ “আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদ -এর পরিবারবর্গ ও মুহাম্মাদ -এর উম্মতের পক্ষ হতে এ কুরবানী কবুল করুন।” তারপর তিনি কুরবানী করলেন।
—ত্বহাবী শরীফ, হাদীস নং ৬২৩৪ (আন্তর্জাতিক নং ৬২৩৫)
ফিকহি দলিল:
যবাই করার পর এ দু‘আটি পড়া :
اللهم تقبل مني كما تقبلت من حبيبك محمد و خليلك إبراهيم عليهما الصلاة والسلام
(বাদায়িয়ুস সানায়ে:৫/৬০, জাওয়াহিরুল ফিকহ:১/৪৫০)
সারকথা হলো, জবেহ করার পর নাম বলা জরুরি নয়, তবে বললেও অসুবিধা নেই।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক