আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৬৮৬: কবরস্থানে ফলের গাছ লাগানো জায়েজ আছে কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৬৮৬:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।আসসালামু আলাইকুম।আমার ঘনিষ্ঠ একজন সার্জেন্ট জিজ্ঞাসা :

কবরস্হানে পেপার গাছ বা অন্য কোনও শষ্য আবাদ করে ভোগ করা যাবে কি না।

অনুগ্রহ করে উত্তর আশা করছি।

তারিখ:  ২৩/০৭/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

মাওলানা মোঃ আমজাদ হোসেন, রংপুর থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, এ ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হলো, কবরস্থানের খালি জায়গা যেখানে কবর নেই, সেখানে অন্য কোনো কাজে জায়গাটা ব্যবহার করা নাজায়েয। অবশ্য সেখানে বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ লাগানো জায়েয। কিন্তু লক্ষ রাখতে হবে যেন লাশ দাফনের কোনো অসুবিধা না হয় এবং এই কাজের জন্য কবরের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে না হয়। দলিল:

يجوز شرعًا زراعة الأشجار في المقابر، ومما يدل على ذلك أن زراعة الأشجار داخلة في عموم القاعدة الشرعية أن الأصل في الأشياء الإباحة ما لم يرد دليل على التحريم، ولم يرد دليل على تحريم زراعة الأشجار في المقابر.

هذا وينبغي أن لا تزرع الأشجار فوق القبور مباشرة، وإنما تزرع في الممرات و الأماكن التي لا يوجد فيها قبور، وذلك خشية أن تتسبب جذورها في إيذاء الميت، إذ إِن إيذاء الميت حرام،

অর্থাৎ, শরয়ীগতভাবে কবরস্তানে বৃক্ষরোপণ করানবৈধ আছে। এর বৈধতার প্রমাণ হলো, বৃক্ষরোপণ হলো উসূলের ফিকহের নিম্নোক্ত নীতিমালার ব্যাপকতার আওতাভুক্ত- " কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধতার প্রমান না পাওয়া গেলে স্বাভাবিকভাবে সেই বিষয়টি বৈধ বলেই বিবেচিত হবে। আর বৃক্ষরোপন নিষিদ্ধ হওয়ার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ মেলেনি। তাই স্বাভাবিকভাবে সেটিও বৈধ বলে পরিগণিত হবে।

তবে গাছের শিকড় ভূ-স্তরে বিস্তার লাভ করে মৃতব্যাক্তি পর্যন্ত পৌঁছে তার কষ্টের কারণ হতে পারে, এই বিবেচনায় সরাসরি একেবারে কবরের উপরেই বৃক্ষরোপন করা অনুচিত। বরং কবরস্তানের চলাচলের জায়গা, কিংবা যে স্থানে কবর নেই, সেখানে গাছ লাগানো যেতে পারে। কারণ মৃতব্যক্তিকে কষ্ট দেয়া সম্পূর্ণভাবে হারাম। যেমন, হাদিস শরিফে এসেছে -

 حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سَعْدٍ، - يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ - عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " كَسْرُ عَظْمِ الْمَيِّتِ كَكَسْرِهِ حَيًّا " .

আল-কা’নবী (রাহঃ) ..... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির হাড় চূর্ণ করা, জীবিত ব্যক্তির হাড় চূর্ণ করার মত। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ -৩২০৭

 সূত্র: হুকমু যিরাআতুল আশজারি ফিল মাকাবির-১১/১৪২২


দ্বিতীয় কথা হলো,

তাই সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কবরস্থান বা ওয়াক্ফিয়া কবরস্থান উভয়টির সকল উৎপাদন কবরস্থানের নিজস্ব সম্পদ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলোকে বিক্রি করে কবরস্থানের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের কাজে লাগাবেন। এলাকাবাসীর জন্য বিনামূল্যে এ ধরনের কবরস্থানের ফলমূল ভোগ করা জায়েয নয়। সূত্র: ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৮৭৩; ফাতাওয়া আলমগীরী ২/৪৭৩; ফাতাওয়া দারুল উলূম ৫/৪১১, কিফায়াতুল মুফতী

উল্লেখ্য যে, কবরস্থানে উৎপাদিত ফল - মূল খাওয়া যায় না, এ কথা সঠিক নয়।


সারকথা হলো,  কবরের সম্মান বজায় রেখে, সরাসরি কবরের উপর না করে পাশে পেঁপে/ ফল জাতীয় গাছ লাগতে এবং ভোগ করতে অসুবিধা নেই।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক