আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৬৯৮: জুমাআর খুতবার আগে আজানের কোন দলিল আছে কি?

No Comments

 












জিজ্ঞাসা-১২৬৯৮:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। জুময়ার নামাজের সময় আরবী খুৎবার শুরুতে আজান দেওয়ার দলীল প্রমাণ সহ জানানোর অনুরোধ করছি।

তারিখ:  ২৭/০৭/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা  ওলিউল্লাহ, সিলেট থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, এ একাধিক সহিহ হাদিস রয়েছে। যেমন,

হাদিস নং -০১

عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ كَانَ يُؤَذَّنُ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم إِذَا جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ

আস-সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আহর দিন খুতবার জন্য  যখন মিম্বারের উপর বসতেন  তখন তাঁর সামনে মাসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে আযান দেয়া হতো। আবূ বাকর ও ‘উমার (রা.) এর সামনেও অনুরূপ করা হতো। তাখরিজ: আবূ দাউদ, হাদীস নং-১০৮৮


হাদিস নং -০২

912 - حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ: «كَانَ النِّدَاءُ يَوْمَ الجُمُعَةِ أَوَّلُهُ إِذَا جَلَسَ الإِمَامُ عَلَى المِنْبَرِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَكَثُرَ النَّاسُ زَادَ النِّدَاءَ الثَّالِثَ عَلَى الزَّوْرَاءِ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: " الزَّوْرَاءُ: مَوْضِعٌ بِالسُّوقِ بِالْمَدِينَةِ "

৮৬৬। আদম (রাহঃ) ......... সায়িব ইবনে ইয়াযীদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ), আবু বকর (রাযিঃ) এবং উমর (রাযিঃ)-এর সময় জুম’আর দিন ইমাম যখন মিম্বরের উপর বসতেন, তখন প্রথম আযান দেওয়া হত। পরে যখন উসমান (রাযিঃ) খলীফা হলেন এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি ‘যাওরা’ থেকে তৃতীয়* আযান বৃদ্ধি করেন। আবু আব্দুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রাহঃ) বলেন, ‘যাওরা’ হল মদীনার অদূরে বাজারের একটি স্থান।

*এর আগে কেবল খুতবার আযান ও ইকামত প্রচলিত ছিল। এখন থেকে তৃতীয় অর্থাৎ, নামাযের জন্য বর্তমানে প্রচলিত আযানের সূচনা হয়। তাখরিজ: বুখারি -৯১২



হাদীসের ব্যখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত উসমান রা.-এর খিলাফতের পূর্ব পর্যন্ত জুমআর দিন খতীবের সামনে একবার আযান দেয়া হতো; যেটাকে আমরা বর্তমানে ছানী আযান বলে থাকি। অতঃপর হযরত উসমান রা.-এর যুগে এসে যখন মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেলো তখন নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে মানুষকে ব্যাপকভাবে জানানোর জন্য তৃতীয় খলীফায়ে রাশেদ হযরত উসমান রা. এ আযানের প্রচলন ঘটালেন। এখন আমাদের জন্য উভয় আযানের অনুকরণ করা ছুন্নাত হবে। কেননা সহীহ হাদীসের বর্ণনায় রসূল স. আমাদেরকে খুলাফায়ে রাশেদার ছুন্নাতের অনুকরণের নির্দেশ দিয়েছেন। (আবু দাউদ-৪৫৫২, মুসনাদে আহমাদ-১৭১৪৪ তিরমিযী-২৬৭৬ এবং ইবনে মাযা-৪২) এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৮৪, ২/১৬১)


উল্লেখ্য, সে যুগে ইকামাতকে আযান বলে গণ্য করা হতো। তাই হাদীসে এটাকে তৃতীয় আযান বলা হয়েছে। অন্যথায় আযান হতো দুটি আর ইকামাত একটি।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক