জিজ্ঞাসা-১২৪২২:
মোটিভেশন ক্লাস: ০৭
আসসালামুআলাইকুম। ইসলামের আলোকে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব । তারিখ: ১১/০১/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা শাকের কুমিল্লা থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ.الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
عَلَّمَ الْإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
অর্থ: পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। সূরা আলাক,৩-৫
ব্যক্তি জীবনে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রশিক্ষণ একটি অত্যন্ত শক্তিশালী মোক্ষম অস্ত্র যা মানবসম্পদ উন্নয়নে এক বিশেষ এবং কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। ছোট বড় সকল প্রতিষ্ঠানেই প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত শিক্ষার পাশাপাশি সুষ্ঠু প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ব্যক্তিকে বিচক্ষণ ও দক্ষ রূপে গড়ে তোলে এবং ভালো কারিগর তৈরিতে যথেষ্ট সহায়ক প্রমাণিত হতে পারে। দুটি স্তরে আলোচনা করবো: সাধারণ প্রশিক্ষণ বা দ্বীনি প্রশিক্ষণ এবং সামরিক প্রশিক্ষণ ।
ক. প্রথম স্তর: সাধারণ প্রশিক্ষণ বা দ্বীনি প্রশিক্ষণ
১. নবি-রাসূল প্রেরণের অন্যতম লক্ষ্য হলো প্রশিক্ষণ দেওয়া: সমস্ত নবি-রাসূলগণই নিজ উম্মাতদেরকে হাতে-কলমে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন। বাস্তব আমল দেখিয়েছেন। যেমন, পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে-
আয়াত-০১
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত। সূরা জুমাআ-০২
আয়াত-০২
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
হে পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন। এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা। সূরা বাকারা-১২৯
২. প্রশিক্ষণ দলে নবিজির অংশগ্রহণ:
الجزء رقم :1، الصفحة رقم:365
361 أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زِيَادِ بْنِ أَنْعُمَ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ رَافِعٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِمَجْلِسَيْنِ فِي مَسْجِدِهِ فَقَالَ : " كِلَاهُمَا عَلَى خَيْرٍ، وَأَحَدُهُمَا أَفْضَلُ مِنْ صَاحِبِهِ : أَمَّا هَؤُلَاءِ فَيَدْعُونَ اللَّهَ وَيَرْغَبُونَ إِلَيْهِ، فَإِنْ شَاءَ أَعْطَاهُمْ وَإِنْ شَاءَ مَنَعَهُمْ، وَأَمَّا هَؤُلَاءِ فَيَتَعَلَّمُونَ الْفِقْهَ وَالْعِلْمَ، وَيُعَلِّمُونَ الْجَاهِلَ، فَهُمْ أَفْضَلُ. وَإِنَّمَا بُعِثْتُ مُعَلِّمًا ". قَالَ : ثُمَّ جَلَسَ فِيهِمْ.
حكم الحديث: في إسناده ضعيفان: عبد الرحمن بن زياد وعبد الرحمن بن رافع
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, একদা রাসুল (ﷺ) মসজিদে নববীতে দু’টি মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেছিলেন, অতঃপর বললেন, তারা উভয় মজলিসই কল্যাণের মধ্যে আছে, তবে একটি অপরটির চেয়ে অধিক ভালো। একটি মজলিস আল্লাহকে ডাকছে এবং তার কাছে প্রাপ্তির আশা করছে, আল্লাহ চাইলে তাদেরকে দিতে পারেন আবার নাও দিতে পারেন। অপর মজলিস ফিকহ ও ইলম শিক্ষা লাভ করছে এবং অশিক্ষিতদেরকে তা শিক্ষা দিচ্ছে। আর এরাই উত্তম মজলিস। আর আমিতো শিক্ষকরূপেই প্রেরিত হয়েছি। অতঃপর তিনি তাদের মাঝে বসে পড়লেন। তাখরিজ: সুনানে দারিমি-৩৬১
উক্ত হাদিস থেকে এটা প্রতিয়মান হয় যে, সর্বত্তম মজলিস হচ্ছে যেখানে দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এবং রাসূল (সা.) ও সেই মজলিসই বেশি পছন্দ করতেন।
৩. কুরআন প্রশিক্ষকরা সর্বশ্রেষ্ঠ: এ বিষয়ে হাদিস শরিফে এসেছে-
وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ رواه البخاري
উসমান ইবন আফ্ফান রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শিখে ও অপরকে শিক্ষা দেয়।” তাখরিজ: বুখারি-১৪১৫
হাদিস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলেম ও তালিবে ইলমের প্রশংসা করে ইরশাদ করেছেন-
وَإِنّ الْمَلَائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا لِطَالِبِ الْعِلْمِ، وَإِنّهُ لَيَسْتَغْفِرُ لِلْعَالِمِ مَنْ فِي السّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، حَتّى الْحِيتَان فِي الْمَاءِ، وَفَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ.
নিশ্চয় ফেরেশতাগণ তালিবে ইলমের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। আর আলেমের জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকে আসমান-যমীনের সবকিছু। এমনকি পানির নিচে থাকা মাছ। (অন্য বর্ণনায়, গর্তের পিপিলিকা।) আলেমের মর্যাদা আবেদের উপর তেমন তারকারাজির মাঝে চন্দ্র যেমন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৭১৫; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৬৮২, ২৬৮৫; ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ১/১৬১
খ. দ্বিতীয় স্তর: সামরিক প্রশিক্ষণ :
১. যুদ্ধের প্রস্তুতি বা প্রশিক্ষণের আল্লাহ তাআলার নির্দেশ: একজন সুদক্ষ, অভিজ্ঞ ও চৌকস যোদ্ধা হতে হলে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই । বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি স্লোগান হল- “কঠিন প্রশিক্ষণ, সহজ যুদ্ধ”। এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত সেনাসদস্যগণ ব্যক্তিগত (রিক্রুট ট্রেনিং,কমান্ড, নিজ নিজ কোরের পেশাগত কোর্স-ক্যাডার-প্রশিক্ষণ) ও দলগত (বছরে চারটি চক্রে, গ্রীষ্মকালীন-শীতকালন প্রশিক্ষণ) প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
আয়াত নং-০১
وَ اَعِدُّوۡا لَهُمۡ مَّا اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ قُوَّۃٍ وَّ مِنۡ رِّبَاطِ الۡخَیۡلِ تُرۡهِبُوۡنَ بِهٖ عَدُوَّ اللّٰهِ وَ عَدُوَّکُمۡ وَ اٰخَرِیۡنَ مِنۡ دُوۡنِهِمۡ ۚ لَا تَعۡلَمُوۡنَهُمۡ ۚ اَللّٰهُ یَعۡلَمُهُمۡ ؕ وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ شَیۡءٍ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ یُوَفَّ اِلَیۡکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لَا تُظۡلَمُوۡنَ
অর্থ: আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে,যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শত্রুদের ওপর এবং তোমাদের শত্রুদের ওপর আর তারেকে ছাড়া অন্যান্যদের ওপর ও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুত যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না। সূরা আনফাল-৬০
গোটা মুসলিম উম্মাহর প্রতি এটা এক স্থায়ী নির্দেশ যে, তারা যেন ইসলাম ও মুসলিমদের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত রাখার লক্ষ্যে সব রকম প্রতিরক্ষা শক্তি গড়ে তোলে। কুরআন মাজীদ সাধারণভাবে ‘শক্তি’ শব্দ ব্যবহার করে বোঝাচ্ছে যে, রণপ্রস্তুতি বিশেষ কোনও অস্ত্রের উপর নির্ভরশীল নয়। বরং যখন যে ধরনের প্রতিরক্ষা-শক্তি কাজে আসে, তখন সেই রকম শক্তি অর্জন করা মুসলিমদের জন্য অবশ্য কর্তব্য। সুতরাং সর্বপ্রকার আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রও এর অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া মুসলিমদের জাতীয়, সামাজিক ও সামরিক উন্নতির জন্য যত রকমের আসবাব-উপকরণ দরকার হয়, সে সবও এর মধ্যে পড়ে। আফসোস! আজকের মুসলিম বিশ্ব এ ফরয আদায়ে চরম অবহেলা প্রদর্শন করেছে। ফলে আজ তারা অন্যান্য জাতির আশ্রিত ও বশীভূত জাতিতে পরিণত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ সূরতহাল থেকে পরিত্রাণ দিন। সূত্র: তাফসিরে তাওজিহুল কুরআন-মুফতি তাকি উসমানি দা.বা.
আয়াত নং-০২
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا خُذُوۡا حِذۡرَکُمۡ فَانۡفِرُوۡا ثُبَاتٍ اَوِ انۡفِرُوۡا جَمِیۡعًا
অর্থ: হে মুমিনগণ, নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়। সূরা নিসা- ৭১
আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিতেছেন। শত্রুর বিরুদ্ধে মুমিনের অস্ত্রের ব্যবস্থা করা, নিজেদের সংখ্যা করা এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে তাফসিরে ইবনে কাসির-৩য় খণ্ড; ১৭৪ পৃষ্ঠা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন
সূত্র: ইসলামের দৃষ্টিতে সৈনিক জীবনের দৈনন্দিন কার্যক্রম-১৩ পৃ. লেখক- মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক (এম.এ কামিল ফিকাহ ও তাফসির, দাওরায়ে হাদিস, আততাখাস্সুস ফিলআদব) ধর্ম শিক্ষক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
রাসূল (ﷺ) এর মদিনার জীবনে সাহাবাদের মধ্যে যুদ্ধের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা:
হাদিস নং-০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَابَقَ بَيْنَ الْخَيْلِ الَّتِي قَدْ ضُمِّرَتْ مِنَ الْحَفْيَاءِ وَكَانَ أَمَدُهَا ثَنِيَّةَ الْوَدَاعِ وَسَابَقَ بَيْنَ الْخَيْلِ الَّتِي لَمْ تُضْمَرْ مِنَ الثَّنِيَّةِ إِلَى مَسْجِدِ بَنِي زُرَيْقٍ وَإِنَّ عَبْدَ اللَّهِ كَانَ مِمَّنْ سَابَقَ بِهَا
আবদুল্লাহ্ ইবন মাসলামা আল কা’নবী ..... আবদুল্লাহ্ ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়াসমূহের মধ্যে দৌড়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান করতেন। মদীনার বাইরে হাফ্ইয়া নামক স্থান হতে সানিয়াতুল বিদা পাহাড়ের পাদদেশে পর্যন্ত পাঁচ মাইল দূরত্বের মধ্যে। আর সাধারণ প্রশিক্ষণহীন ঘোড়ার মধ্যে দৌড়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান করতেন সানিয়াতুল বিদা পাহাড় হতে বনী যুরাইক গোত্রের মসজিদ পর্যন্ত ছয় মাইল দূরত্বের মধ্যে। আর আবদুল্লাহ্ উক্ত দৌড়ে সকলের অগ্রগামী হতেন। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ-২৫৬৭; বুখারী ৪২১, মুসলিম ১৮৭০
হাদিস নং-০২
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: "ارْمُوا وَارْكَبُوا، وَأَنْ تَرْمُوا خَيْرٌ مِنْ أن تركبوا রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা তিরন্দাযী কর এবং ঘোড়সওয়ার হও, তবে তীরন্দাযী করা ঘোড়সওয়ারী হওয়ার চেয়ে উত্তম। তাখরিজ: আবু দাউদ-২৫১৩, তিরমিজি-১৬৩৭
হাদিস নং-০৩
وعْن عقبة بن عامر أَنَّهُ قَالَ: قَال رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: منْ عُلِّمَ الرَّمْيَ ثُمَّ تركَهُ، فَلَيس مِنَّا، أوْ فقَد عَصى رواه مسلم.
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তীর পরিচালনা শিখলো তারপর তার অভ্যাস ছেড়ে দিল সে আমাদের (উম্মতের দলভুক্ত) নয়। অথবা তিনি বলেছেন, সে পাপ করলো। মুসলিম-৪৭৯৬
হাদিস নং-০৪
عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى نَفَرٍ مِنْ أَسْلَمَ يَنْتَضِلُوْنَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ارْمُوْا بَنِيْ إِسْمَاعِيْلَ فَإِنَّ أَبَاكُمْ كَانَ رَامِيًا ارْمُوْا وَأَنَا مَعَ بَنِيْ فُلَانٍ قَالَ فَأَمْسَكَ أَحَدُ الْفَرِيْقَيْنِ بِأَيْدِيْهِمْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا لَكُمْ لَا تَرْمُوْنَ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ نَرْمِيْ وَأَنْتَ مَعَهُمْ قَالَ ارْمُوْا وَأَنَا مَعَكُمْ كُلِّكُمْ
অর্থ: হজরত সালামা ইবনু আকওয়া (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) গোত্রের একদল লোকের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এ সময় তারা তীরন্দাজীর প্রতিযোগিতা করছিল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে বনী ইসমাঈল! তোমরা তীরন্দাজী করে দাও। কেননা তোমাদের পূর্বপুরুষ তীরন্দাজ ছিলেন। সুতরাং তোমরাও তীরন্দাজী করে যাও আর আমি অমুক গোত্রের লোকদের সঙ্গে আছি। রাবী বলেন, তাদের এক পক্ষ হাত চালনা হতে বিরত হয়ে গেল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের কী হল, তোমরা যে তীরন্দাজী করছ না? তখন তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিভাবে তীর ছুঁড়তে পারি, অথচ আপনি তো তাদের সঙ্গে রয়েছেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা তীর ছুঁড়তে থাক, আমি তোমাদের সবার সঙ্গেই আছি। বুখারি-২৮৯৯
উপসংহার: প্রশিক্ষণ যেকোনো ক্ষেত্রে হতে পারে। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিভিন্ন প্রকার প্রশিক্ষণ যেমন হতে পারে সেটা ইসলামি কিংবা পেশাগত দক্ষতা, কারিগরি দক্ষতা ইত্যাদি বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক