জিজ্ঞাসা-১২৬৭৪:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম,মসজিদে জুমা'র নামাজ চালু করার পর বন্ধ করা যায় কিনা, আর বন্ধ করা হলে সেক্ষেত্রে শরীয়তের কোন বিধান লংঘিত হয় কিনা, সে বিষয়ে দালিলিক আলোচনা পেশ করতে এডমিনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। বিষয়টি জরুরি। আসসালামু আলাইকুম।
তারিখ: ১৪/০৭/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মনিরুল ইসলাম, রাজশাহী থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, আপনি উল্লেখ করেননি মসজিদটি পাঞ্জেগনা, জামে বা শরয়ি মসজিদ কি না?
যদি প্রয়োজনের খাতিরে পাঞ্জেগনা মসজিদে/ যেকোন জায়গায় সাময়িক ভাবে জুমাআ চালু করার পর বন্ধ করলে কোন অসুবিধা নেই।
এবং জামে মসজিদ হলে মুসলমানদের উপকার্থে, বিশেষ কারণে জুমাআ বন্ধ করা জায়েজ হবে।
আর যদি শরয়ি জামে মসজিদে একবার জুমাআ চালু করার পর কোন ওজর ছাড়াই বন্ধ করলে, গুনাহগার হবে।
তবে একবার মসজিদ হিসেবে ওয়াকফকৃত হবার পর মসজিদ নির্মাণ হয়ে যাবার পর তা কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদ হিসেবেই বাকি থাকবে। এটিকে পাল্টানো কিছুতেই জায়েজ নয়। (একান্ত ওজর ছাড়া)।
অর্থাৎ জুমাআ বন্ধ করলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা কুরআন শিক্ষা চালু রাখতে হবে। কোন ক্রমেই মসজিদ বিরান করা যাবে না। দলিল:
Surah Al-Baqara, Verse 114:
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللَّهِ أَن يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ وَسَعَىٰ فِي خَرَابِهَا أُولَٰئِكَ مَا كَانَ لَهُمْ أَن يَدْخُلُوهَا إِلَّا خَائِفِينَ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যে ব্যাক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে, তার চাইতে বড় যালেম আর কে? এদের পক্ষে মসজিদসমূহে প্রবেশ করা বিধেয় নয়, অবশ্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়। ওদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে। সূরা বাকারা-১১৪
ব্যাখ্যা: এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম কুরতুবি,ইমাম বাইজাবি রহ. রহ বলেন,
لا يجوز نقض المسجد ولا بيعه ولا تعطيله وان خআربت المحلة (تفسير قرطبى، سورة بقرة، الآية-114-1/7، تفسير المراغى-1/198، تفسير بيضاوى-1/386)
অর্থাৎ একবার শরয়ি মসজিদ নির্মাণ হলে তা ভেঙে ফেলা,তাতে বেচাকেনা করা এবং তা বিরান করা জায়েজ নেই। তাফসিরে কুরতুবি-১/৭; তাফসিরুল মারাগি -১/১৯৮; তাফসিরে বাইজাবি -১/৩৮৬
সারকথা হলো, অস্থায়ীভাবে জুমাআর সালাত চালু করার পর প্রয়োজনে আবার বন্ধ করলে কোনো অসুবিধা নেই। জামে মসজিদেও বিশেষ প্রয়োজনে জুমা বন্ধ করলে, মসজিদ বিরান এর অন্তর্ভুক্ত হবে না। তবে কোনো কারণ ছাড়াই শরয়ি মসজিদে একবার জুমাআ চালু করার পর বন্ধ করা গুনাহের কাজ। মসজিদ বিরান এর অন্তর্ভুক্ত।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক